যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফুন্নাহার রূপার রহস্যজনক মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ ও সুষ্ঠু তদন্তের ভিত্তিতে অপরাধীর বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে উক্ত বিভাগের শিক্ষক - শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে রূপার মৃত্যু স্বাভাবিক নয় জানিয়ে এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি তুলেন উক্ত বিভাগের শিক্ষক - শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৩মে) দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল মধুসূদন দত্ত লাইব্রেরী কাম একাডেমিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের চেয়ারম্যান ও ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার বলেন, "আমরা রূপার মৃত্যুতে খুবই শোকাহত। রূপার মতো সদা হাস্যোজ্জ্বল মেয়ে কখনও আত্মহত্যা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করিনা। আমরা রূপার মৃত্যুর কথা শুনে তার এলাকায় গেলে সেখানে সকলের মুখে শুনি সে আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না, এর পিছনে অবশ্যই অন্য কোনো রহস্য আছে। আমরা এই মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।"
পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো:শিমুল ইসলাম বলেন, "শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় রূপার বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পর থেকেই আমরা তার থেকে শুনতাম যে তার ওপর অনেক নির্যাতন করা হয়। হঠাৎ একদিন রূপা তার শিক্ষিকা আমাদেরই সহকর্মী ড. ফাতেমা তুজ জোহরাকে বলেন, তার উপর প্রতিনিয়ত অনেক খারাপ কিছু ঘটেই চলেছে। তার যদি কখনও মৃত্যু ঘটে তাহলে সেটি অবশ্যই হত্যা। এছাড়া রূপার সাথে আমাদের অনেক শিক্ষকের কথা হতো সেখান থেকে আমরা এই ঘটনাকে বেশ সন্দেহজনক মনে করছি। তাছাড়া আমরা রূপার মৃত্যুর কথা শুনে তার গ্রামে যায় এবং সেখানে পাওয়া তথ্যমতে এই মৃত্যুটি হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমরা প্রশাসনের নিকট এই মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।"
পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের মাস্টার্স ২য় পর্বের শিক্ষার্থী নিশাত চাঁদনী লিজা জানান, "রূপা আপুর সাথে গত এক মাস ধরে আমার নিয়মিত কথা হতো। তিনি তার সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পাঠিয়েছিলেন এবং আমাকে অতিদ্রুত তার সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য তাগিদ দিয়ে যাচ্ছিলেন। আপুর মৃত্যুর কয়েকদিন আগেও তার সাথে আমার কথা হয়। এখান থেকে আমার কখনোই মনে হয়নি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। একজন মানুষ আত্মহত্যা করতে চাইলে কখনোই আমাকে তার সার্টিফিকেট তুলার জন্য বার বার তাগিদ দিতেন না। এর পিছনে অবশ্যই অন্য কোনো রহস্য রয়েছে।"
উল্লেখ্য, গত ১০ মে আশরাফুন্নাহার রূপার মৃতদেহ রহস্যজনকভাবে বেনাপোলে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
একুশে সংবাদ/যবিপ্রবি.প্র/এ.জে