ঢাকার সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইংরেজি বিভাগের ছাত্রদের হাতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীসহ অন্তত ৩ জন আহত হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন- ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী শাওন, দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাজিদসহ অজ্ঞাত আরও চারজন।
শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুরের দিকে খেলার মাঠে ফুটবল খেলছিল ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টার ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। ওই সময় মাঠের বাইরে বসেছিলেন সমাজকর্ম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় মাঠ থেকে বল সজোরে এসে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ঘাড়ে লাগে। এতে তিনি আঘাত পান। তাকে সেখানেই সেবা শুশ্রূষা করার সময় ফের বল তাদের সঙ্গের আরেকজনের গায়ে লাগে। বিষয়টি নিয়ে তারা খেলার মাঠে ঢুকে প্রতিবাদ জানান। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে কিলঘুষিতে এক ছাত্রীসহ ৩-৪ জন আহত হন। আহতের উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।
বুধবার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বলেন, ‘দ্বিতীয়বার বল লাগার কারণে আমরা এগিয়ে গিয়ে ওদের পরিচয় জানতে চাই। ওরা জুনিয়র জেনে বলি, তোমরা একটু দুঃখ প্রকাশও করলে না। ওই সময় একজন বিষয়টি তোয়াক্কা না করেই খেলা শুরুর কথা বলে। তখন শাওন এসে আমাদের ধমকাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাদের বাসার ঠিকানা জানতে চায়। একজন বলতেই তারা বলে আমরা স্থানীয়। তখন আমরাও বলি আমরাও ধামরাইয়ের। এটা শুনেই একজন আমাকে অপ্রকাশযোগ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। আমিও পাল্টা জবাব দিলে একটা ছেলে আমার দিকে তেড়ে আসে। তার এক হাত ধরে ফেললেও আরেক হাত দিয়ে আমাকে কয়েকটি ঘুষি দেয়। থামাতে গিয়ে তারাও মারধরের শিকার হয়। আশপাশের লোকজন এসে মারামারি থামালেও তারা আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। শিক্ষকরা এসে আমাদের উদ্ধার করে প্রথমে বিভাগে ও পরে হাসপাতালে পাঠায়। এরমধ্যে ৯৯৯ এও কল দেওয়া হয়। হাসপাতালে এসে পুলিশ দেখে গেছে।’
মারধরের অভিযোগ ওঠা সাজিদ নামে এক শিক্ষার্থীর দাবি, তারা মারধর করেননি। বরং ওই ছাত্রী সিনিয়র জেনে তাকে থামিয়েছেন কেবল। তিনি বলেন, ‘ফুটবল খেলা চলছিল। আপুরা গোলবারের সাইডে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন বল লাগে। আমাদের বন্ধুরা স্যরি বলছিল। উনি হয়তো খেয়াল করেনি। উনি মাঠে এসে আমাদের গালাগালি করে। আপু তেড়ে আসছে তাকে থামানো হয়েছে। কোনো হাত তোলা হয়নি। উনি মারতে আসছে। তাকে থামানো হয়েছে। এটাও আত্মরক্ষার জন্য।’
ওই ছাত্রীকে মাঠ থেকে উদ্ধারের সময় ছিলেন সমাজকর্ম ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সুজন। তিনি বলেন, ‘একটি ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আলী আজম বলেন, ‘দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :