ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) নতুন ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করেছে। এই নীতিমালা দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রধান উদ্দেশ্য হলো সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করা, প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং ভোটারের আস্থা বজায় রাখা।
ইসি জানিয়েছে, শুধুমাত্র গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত বেসরকারি সংস্থা এবং যাদের নিবন্ধিত গঠনতন্ত্রে নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য তথ্য প্রচার ও উদ্দীপনা বৃদ্ধির অঙ্গীকার আছে, তারা আবেদন করতে পারবে।
সংস্থাগুলোকে নিবন্ধনের জন্য দৈনিক পত্রিকায় ১৫ দিন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। নির্ধারিত ফরম (EO-1) এবং প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিলে আবেদন গ্রহণযোগ্য হবে।
নির্দিষ্ট শর্তে কোনো সংস্থার নিবন্ধন দেওয়া হবে না, যেমন:
সংস্থার প্রধান নির্বাহী বা পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলে।
জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থার নামের সঙ্গে হুবহু মিল থাকলে যা সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে, তবে আন্তর্জাতিক সংস্থার ক্ষেত্রে লিখিত অনুমোদন থাকলে বিবেচনা করা যেতে পারে।
আগের নির্বাচনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া সংস্থা নতুন নিবন্ধন পাবে না।
নিবন্ধনের মেয়াদ ৫ বছর এবং মেয়াদ শেষের পর কিছু শর্ত সাপেক্ষে নবায়নযোগ্য। ৫ বছরের মধ্যে জাতীয় সংসদের কোনো একটি সাধারণ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকারের কমপক্ষে ৪টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। প্রতি ২ বছর অন্তর দ্বি-বার্ষিক প্রতিবেদনও দাখিল করতে হবে। সংস্থাগুলোকে সবসময় নীতিমালা ও দেশের আইন-কানুন মেনে চলতে হবে।
পর্যবেক্ষকের যোগ্যতা ও মোতায়েন :
নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে একজন ব্যক্তির লিখিত যোগ্যতা থাকতে হবে।
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
২. বয়স ২১ (একুশ) বছর বা তদূর্ধ্ব হতে হবে।
৩. ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
৪. কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হতে পারবে না।
৫. কোনো রাজনৈতিক দল বা দলের অঙ্গসংগঠন বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাথে ব্যক্তিগত স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারবে না।
৬. রাজনৈতিক দল বা এর অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কেউ পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না।
৭. পর্যবেক্ষক মোতায়েনের একক ইউনিট হবে উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানা অথবা সংসদীয় নির্বাচনী এলাকা।
৮. পর্যবেক্ষকদের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা বা ভোটার হওয়া চলবে না।
৯. নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনের আগের দিন, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচনের পরের দিন, অর্থাৎ ৩ (তিন) দিনের জন্য পর্যবেক্ষক মোতায়েন করতে পারবে।
পর্যবেক্ষক বাতিল প্রক্রিয়া
নির্দিষ্ট অভিযোগ বা নীতিমালা লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ইসি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে ১০ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত ধরা হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫ দেখতে ক্লিক করুন ।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

