‘মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশ ও নতুন বন্দোবস্তের লক্ষ্যে তারুণ্যের প্রত্যয়’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তি’। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে আবরার ফাহাদ অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ১৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দিয়ে সংগঠনটির পথচলার সূচনা হয়।
ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. তরিকুল ইসলাম।
সদস্য সচিব নির্বাচিত হয়েছেন ডা. জাহিদুল ইসলাম, আর মুখ্য সংগঠকের দায়িত্ব পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল।
অনুষ্ঠানে পাঠ করা হয় সংগঠনের ঘোষণাপত্র, যেখানে উঠে আসে তরুণ প্রজন্মের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা ও নতুন প্রজাতন্ত্র নির্মাণের প্রত্যয়। এতে বলা হয়—“ইতিহাসের প্রতিটি মৌলিক পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিয়েছে তরুণেরা। এখন সময় এসেছে এক নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের।”
ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭-এর উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, এবং সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানকে এক ধারাবাহিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
‘জাতীয় যুবশক্তি’ নিজেদের রাজনীতিকে ‘দায় ও দরদের অনুশীলন’ বলে বর্ণনা করে বলেছে—“নেতৃত্ব মানে দায়িত্ব গ্রহণ, সহানুভূতি ও নাগরিক সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ। এই নৈতিক অবস্থান থেকেই আমরা অধিকার ও সংহতির রাজনীতি গড়ে তুলতে চাই।”
ঘোষণাপত্রে একটি অবিচারহীন, ইনসাফভিত্তিক ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা জানানো হয়েছে। বলা হয়—“আমরা চাই এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে নাগরিক মর্যাদা কেবল কাগজে নয়, বাস্তব জীবনে প্রতিফলিত হবে। রাষ্ট্রকে হতে হবে সব ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্ম ও জাতিসত্তার মর্যাদা প্রদানকারী।”
ঘোষণাপত্রে জুলাইয়ে শহিদ ও আহতদের স্মরণ করে বলা হয়—“জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল কেবল ক্ষোভের বিস্ফোরণ নয়, ছিল নতুন রাজনৈতিক কল্পনার জন্ম। জাতীয় যুবশক্তি সেই অভ্যুত্থানেরই ধারাবাহিকতায় গঠিত একটি রাজনৈতিক শক্তি।”
আত্মপ্রকাশের মধ্য দিয়ে ‘জাতীয় যুবশক্তি’ তরুণদের মধ্যে বিকল্প রাজনৈতিক চেতনার নতুন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আবির্ভূত হতে চায় বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
এখন দেখার বিষয়, এই উদ্যোগ তরুণ সমাজে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং তারা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কতটা প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে