লোকাল ট্রেনের কামরায় বিজ্ঞাপন থেকে প্ল্যাটফর্মের দেওয়াল-রঙিন কাগজে প্রায়ই দেখা যায় ‘স্বপ্নদোষ’ শব্দটি ৷ এর অর্থ কী? এখানে স্বপ্ন এবং তার সঙ্গে দোষই বা কোথায় জড়িয়ে থাকে? আমাদের সমাজে যৌনতা এখনও লুকোচুরির বিষয় ৷ তাই এ সব প্রসঙ্গে আলোচনা বিতর্কিতই থেকে যায় ৷ বিশেষজ্ঞ সারাংশ জৈন জানিয়েছেন স্বপ্নদোষ সমস্যার বিষয়ে।
শুধু ছেলেদেরই নয় ৷ স্বপ্নদোষ দেখা দেয় মেয়েদের মধ্যেও৷ রাতে ঘুম ভেঙে যায় ৷ অন্তর্বাস, নিম্নাঙ্গের পোশাক তো বটেই ৷ অনেক সময় ভিজে যায় বিছানার চাদরও৷ কৈশোরেই এই বিভ্রাট বেশি হয় ৷ দেখা দিতে পারে জীবনের পরবর্তী সময়েও ৷ অনেক সময় আদি রসাত্মক স্বপ্নের জেরে পুরুষদের বীর্যপাত হলে তাকে স্বপ্নদোষ বা ইংরেজিতে 'wet dream' বলা হয় ৷
মাস্টারবেশন, কোনও ম্যানুয়াল স্টিমুলেশন ছাড়াই লিঙ্গোত্থান ও বীর্যপাত হয়ে যায় স্বপ্নদোষের ক্ষেত্রে ৷ অর্থাৎ নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে অর্গ্যাজম হয় এখানে ৷ তাই ইংরেজিতে একে বলা হয় ‘নক্টারনাল এমিশন’ বা ‘নৈশকালীন নির্গমন’৷
রাতে ঘুমের মধ্যে যৌনাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় ৷ যখন পুরুষরা কৈশোরে পৌঁছয়, তখন শরীরে টেস্টোটেরন হরমোন উৎপন্ন হয় ৷ টেস্টোটেরন হরমোনের প্রভাবে শুক্রাণু-সহ বীর্য উৎপন্ন হয় ৷ স্বপ্নদোষের মাধ্যমে শরীর থেকে বীর্য বেরিয়ে আসে বা বীর্যপাত হয় ৷ এছাড়াও আরও কারণ আছে পুরুষদের স্বপ্নদোষের পিছনে৷
যৌনতা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা, পর্নোগ্রাফি বা নীল ছবি বেশি দেখার মতো কারণও দায়ী এই ঘটনার ক্ষেত্রে ৷ সেক্সুয়াল অ্যাক্টিভিটি দীর্ঘ দিন না হলেও এই সমস্যা দেখা দেয় ৷ বিছানার সঙ্গে যৌনাঙ্গের ঘর্ষণের জেরে পুরুষদের লিঙ্গোত্থান হয়ে যায় অজান্তেই ৷ ফলে ঘুমের ঘোরে স্বপ্নদোষ স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় ৷
রাতের ঘুমোতে যাওয়ার সময় ইউরিনারি ব্লাডার পরিপূর্ণ থাকলেও স্বপ্নদোষ হতে পারে ৷ টেস্টোটেরন হরমোনের সাপ্লেমেন্ট নিলেও স্বপ্নদোষ হানা দিতে পারে ঘুমের মধ্যে৷
যৌনাঙ্গের পেশি ও স্নায়ু দুর্বল হলেও স্বপ্নদোষ বার বার ফিরে আসতে পারে ঘুমের মধ্যে৷ তবে বিশেষজ্ঞ সারাংশ জৈনের মতে, স্বপ্নদোষ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই ৷ এটা কোনও শারীরিক অসুস্থতা নয় ৷ তবে এই সমস্যা যদি ঘন ঘন হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বাঞ্ছনীয় ৷
একুশে সংবাদ.কম/জা.হা