বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশ দিন দিন উন্নত হচ্ছে। দন্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা হয়েছে অনেক আধুনিক। কিন্তু সারা বাংলাদেশের অধিকাংশ বিভাগের গ্রাম পর্যায়ের মানুষ এখনো জানেন না কিভাবে দাঁত মাজতে হয়? কী দিয়ে, কয়বার মাজতে হয়?
চিকিৎসা ব্যবস্থা যতই আধুনিক হোক না কেন, যে দেশের মানুষ ঠিক মতো দাঁত ব্রাশ করতে জানে না, তাদের মুখ ও দন্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোনো ভাবেই উন্নতি সম্ভব নয়।
সিলেট বিভাগে শহর এবং গ্রামের স্কুলের বাচ্চাদের দাঁত ও মাড়ির অসামঞ্জস্যতা সমস্যা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। শহরের বাচ্চাদের গ্রামের তুলনায় কিছুটা বেশি দাঁত উচু, নিচু, আঁকা বাঁকা। আর মেয়ে বাচ্চাদের দাঁতে বেশি সমস্যা।
জানা যায় তারা ঠিক মতো দাঁত ব্রাশ করতে জানে না, শক্ত খাবার চিবিয়ে খেতে চায় না, দাঁতে ক্ষয় হলে ডাক্তারের কাছে যায় না, বিশেষ করে মেয়ে বাচ্চাদের ধর্মীয় গোড়ামির কারণে ডাক্তার দেখাতে চায় না, বেশি বেশি ফাস্টফুড খায়। সবশেষে বিভিন্ন বিডিএস ডাক্তার নয় এমন লোকদের কাছে ভুল চিকিৎসা নিয়ে অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছে।
ছোটবেলা থেকে যদি দুধ দাঁতের যত্ন না নেয়া হয়, ভবিষ্যতে দাঁত উঁচু নিচু আঁকা বাঁকা ছাড়াও মাড়ির নানা রকম সমস্যা নিয়ে, এই শিশুরা বড় হয়ে উঠবে। আমাদের এখনই উচিত শিশুদের দাঁতের যত্নে পথ শিশু থেকে শুরু করে, স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানা সব জায়গায় সচেতনতার পাশাপাশি দাঁত ব্রাশের টুথ পেস্ট, টুথ ব্রাশ বিনামূল্যে, স্বল্পমূল্যে পৌঁছে দেয়া।
শিশুদের দাঁতের যত্ন মায়ের গর্ভ থেকে শুরু করতে হয়। গর্ভাবস্থায় মা অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে থাকার ফলে মায়ের শরীরে বিভিন্ন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ হয় যার ফলে বাচ্চার ঠোঁট ও তালু কাটা হয় বা হওয়ার আশংকা বেশি থাকে।
গর্ভবতী মায়ের বয়স বেশি হলে, ডায়াবেটিস, মাত্রাতিরিক্ত মেডিসিন নিলে বা হেভিডোজের ড্রাগ মাদকাসক্ত হলে, গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর খাবারের অভাব হলে শিশুর ঠোঁট ও তালু কাটা হতে পারে। কিছু ওষুধ আছে যা খেলে বাচ্চার দাঁত হলুদ হতে পারে। তাই মাকে এবং শিশুর অভিভাবককে অবশ্যই শিশুর দাঁতের যত্ন সম্পর্কে সচেতন এবং জ্ঞানী হতে হবে।
এখনই সময় এই শিশুদের এবং তাদের অভিভাবকদের দাঁতের যত্নে ভীষণভাবে সচেতন হওয়া। দাঁতের আঁকা বাঁকা, উঁচু নিচু চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ এবং ব্যয় বহুল।
সারা বাংলাদেশের মানুষকে এই ব্যপারে সচেতন করতে হবে। অন্যথায় চিকিৎসার অভাবে বড় হয়ে নানা রকম সমস্যার সম্মুখীন হবে শিশুরা। আজকের শিশুরা আগামীদিনের ভবিষ্যত। শিশুদের এবং অভিভাবকদের মাঝে দন্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি না করলে, এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভবিষ্যতে ভীষণ ভাবে ঝুঁকিতে পড়বে।
একুশে সংবাদ /এসএম