মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘জুলাই-আগস্ট গণহত্যা’–সংক্রান্ত তদন্ত রিপোর্ট আগামী সোমবার (১২ মে) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে যাচ্ছে তদন্ত সংস্থা। এরপরই আনুষ্ঠানিক চার্জশিট (ফরমাল চার্জ) দাখিল করে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
এই তথ্য শুক্রবার দুপুরে নিজের ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম লেখেন, “ইতোমধ্যে চানখারপুল হত্যাকাণ্ডে সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হচ্ছে এই সপ্তাহেই। একইসাথে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মূল মামলার চার্জশিট প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে।”
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন, যেখানে সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, বৈষম্যমূলক নীতি এবং গুম-খুনের অভিযোগ এনে রাজপথে নামে হাজার হাজার তরুণ।সরকারি দমন-পীড়নে এই আন্দোলনে প্রাণ হারায় আনুমানিক দেড় হাজার মানুষ।
৫ আগস্ট ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ায় শেখ হাসিনা সরকার। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ১৭ ডিসেম্বর দায়ের হওয়া দুটি মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার শুরু হয়। ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাইব্যুনাল এই মামলার তদন্ত ২০ এপ্রিলের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেয়, যা এখন পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে।
তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের পর প্রসিকিউশন আনুষ্ঠানিক চার্জ দাখিল করবে। এরপর আদালত শুনানির মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত দেবে।
এই বিচারিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে একটি নির্বাচিত সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব মানবতাবিরোধী অপরাধে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ ঢ.প/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :