কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার জানিয়েছেন, তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালাতে পারে। তিনি বলেন, ভারত যদি এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়, তবে পাকিস্তান তার উপযুক্ত জবাব দেবে।
পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই হিন্দু পর্যটক। এই হামলার দায়িত্ব একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন `কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স` দাবি করলেও, ভারত পাকিস্তানকে হামলার জন্য দায়ী করেছে। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
ভারত সরকার এই হামলার পর কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত: ভারত ১৯৬০ সালের এই চুক্তি স্থগিত করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন নিয়ন্ত্রণ করে।
ভিসা বাতিল ও সীমান্ত বন্ধ: ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে এবং ওয়াগা-আটারি সীমান্ত বন্ধ করেছে।
কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস: পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ইসলামাবাদ থেকে ভারতীয় কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ভারতের পদক্ষেপের জবাবে পাকিস্তানও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে:
আকাশসীমা ও বাণিজ্য বন্ধ: পাকিস্তান ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করেছে।
সিমলা চুক্তি স্থগিতের হুমকি: পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত করার হুমকি দিয়েছে, যা কাশ্মীর ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়েছে। এতে উভয় পক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে এবং সন্দেহভাজনদের বাড়িঘর ধ্বংস করছে।
এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। উভয় পক্ষের উচিত সংযম প্রদর্শন করা এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করা, যাতে আরও সংঘর্ষ এড়ানো যায়।
একুশে সংবাদ//ঢ.প//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :