বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার ও এতে নাগরিকদের অংশগ্রহণে সমতা নিশ্চিত করে ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ চালু করেছে ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ ইনোভেশন’। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনের একটি হাই-লেভেল সাইড ইভেন্টে এই ডিজিটাল উদ্ভাবনী প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-এর মাননীয় মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, এমপি। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), অবজারভার রিসার্স ফাউন্ডেশন এবং পিপল-সেন্টার্ড ইন্টারনেট এর যৌথ সহযোগিতায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এটুআই এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এই সেন্টার চালু করেছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব মুহাম্মদ আব্দুল মুহিত। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক, এমপি, সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। অনুন্নত দেশগুলোতে সহজলভ্য ডিজিটাল কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা, ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং নাগরিক সেবার ডিজাইন উন্নতিকরণসহ নানাবিধ প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিতে বৈশ্বিক হাব হিসেবে ভূমিকা রাখবে ই-কোয়ালিটি সেন্টার। উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তোলাই এই সেন্টারের উদ্দেশ্য।
উদ্বোধনকালে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর অভিযাত্রার গল্প তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। এসময় তিনি দেশের ডিজিটালাইজেশন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং বিবর্তনের যাত্রার কথা তুলে ধরেন। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে জ্ঞান বিনিময়, প্রযুক্তি সমন্বয়, নীতি গবেষণা এবং অর্থায়নসহ নানান প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। ই-কোয়ালিটি সেন্টারকে বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে এই উদ্ভাবনী উদ্যোগকে বিশ্বের প্রতি এমন একটি প্রতিশ্রুতির প্রতীক হিসেবে বর্ণনা করেন যেখানে প্রযুক্তি একটি সমতা ও অগ্রগতি একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা হিসেবে চিহ্নিত হয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইসিটি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তি অনুবিভাগের মাধ্যমে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিতকরণ ও প্রয়োজনীয় উদ্ভাবনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে যার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল ভিশন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। সুদৃঢ় অংশীদারত্ব, বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আত্মীকরণের মাধ্যমে ই-কোয়ালিটি সেন্টার ডিজিটাল বিভাজনমুক্ত মানবজাতি সৃজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে ই-কোয়ালিটি সেন্টারের কারিগরি ও ব্যবহারিক নানা দিক উপস্থাপন করেন এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী। তিনি বলেন, অনুন্নত দেশগুলোতে ডিজিটাল ব্যবধান কমাতে সহজলভ্য ডিজিটাল কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করা, ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধি করা, সেবার ডিজাইন উন্নতিকরণসহ টেকসই ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়তে নিবেদিত থাকবে এই ই-কোয়ালিটি সেন্টার। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে প্রযুক্তিগতভাবে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :