দুর্গম পাহাড়, চরাঞ্চল কিংবা ব্রডব্যান্ড-বঞ্চিত সীমান্ত জনপদ— যেখানে এখনো পৌঁছেনি ফাইবার অপটিক সংযোগ, সেইসব এলাকায় দ্রুতগতির ইন্টারনেটের নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলল। আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বোর্ডরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্টারলিংকের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্টারলিংকের ব্যবসা পরিচালনা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট লরেন ড্রেয়ার এবং আন্তর্জাতিক কৌশল ও সরকারি সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক রিচার্ড গ্রিফিথস।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও উদ্যোগে বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি কেবল প্রযুক্তির অগ্রগতি নয়, দেশের সার্বিক ডিজিটাল কাঠামোর জন্যও একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পরীক্ষামূলক থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা
গত তিন মাস ধরে পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের পর শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেবা দেওয়া শুরু করে স্টারলিংক। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে ‘স্যাটেলাইট অপারেটর লাইসেন্স’ এবং ‘রেডিও কমিউনিকেশন অ্যাপারেটাস লাইসেন্স’ পেয়েছে, যার মেয়াদ ১০ বছর।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, স্টারলিংকের সেবা গ্রহণ করতে গ্রাহকদের প্রাথমিকভাবে ৪২ হাজার টাকা খরচে একটি সেটআপ কিট কিনতে হবে। এতে থাকবে স্যাটেলাইট রিসিভার ডিস, রাউটার, পাওয়ার সাপ্লাইসহ প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম। এরপর মাসিক ভিত্তিতে দুটি প্যাকেজের যেকোনো একটি বেছে নেওয়া যাবে।
স্টারলিংকের ঘোষিত দুটি প্যাকেজ হলো— স্টারলিংক রেসিডেন্সিয়াল এবং স্টারলিংক লাইট।
রেসিডেন্সিয়াল প্যাকেজের মাসিক মূল্য ৬ হাজার টাকা, যেখানে সর্বোচ্চ ৩০০ এমবিপিএস গতিতে আনলিমিটেড ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে।
লাইট প্যাকেজের মূল্য ৪ হাজার ২০০ টাকা, যা তুলনামূলক কম দামে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা দেবে।
এ সেবার মাধ্যমে দেশের দূরবর্তী, সংযোগবিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোর মানুষও সহজেই দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে