AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিবাহিত, তবু বিবাহিত নন!


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০২:৪৪ পিএম, ৩ অক্টোবর, ২০২৩
বিবাহিত, তবু বিবাহিত নন!

‘বিচ্ছেদ বিবাহ’- নামেই এখন জনপ্রিয় এই নতুন ধারার ‘বিয়ে’। এর ফলে বিবাহিত এবং অবিবাহিত থাকার, দু’রকম সুবিধাই পাচ্ছেন দম্পতিরা। একে অপরকে ভালবাসছেন, রোজ খোঁজ নিচ্ছেন স্বামী-স্ত্রী। অথচ একে অপরের জন্য চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে না। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালবাসা না থাকলে অবশ্যই এই ধরনের বিয়ে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

সম্প্রতি জাপানের একটি সংবাদমাধ্যম হিরোমি তাকেদা আর হিদেকাজ়ু দম্পতির কথা তুলে ধরেছেন, যারা ‘বিচ্ছেদ বিবাহ’-তে আবদ্ধ। হিরোমি ফিটনেস ট্রেনার। তাঁর নিজের একটি জিম রয়েছে। নিজেকে স্বাধীনচেতা, পরিণত বলে জানিয়েছেন হিরোমি। হিরোমির স্বামী হিদেকাজ়ু বিভিন্ন সংস্থার ব্যবসা সংক্রান্ত উপদেষ্টা। দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে কম্পিউটারের সামনে। মিটিং, ইমেলের জবাব, রিপোর্ট লিখে দিন কাটে।

হিরোমি আর হিদেকাজ়ুর পেশা একেবারে ভিন্ন। জীবনযাপনও ভিন্ন। একেবারে আলাদাভাবে দিন কাটে দু’জনের। অথচ পরস্পরকে শ্রদ্ধা করেন, ভালবাসেন তারা। একে অপরের ব্যক্তিগত জীবনে নাকও গলাতে চান না। সে কারণে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।

হিদেকাজ়ু একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খুব কম রাতেই আমি স্ত্রীর বাড়িতে থাকতে পারি। কেরিয়ার আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।’ এ ক্ষেত্রে আগের বিয়ের থেকে একটি শিক্ষা নিয়েছেন তিনি বলেও জানিয়েছেন।

হিদেকাজ়ুর কথায়, প্রাক্তন স্ত্রীকেও একেবারে সময় দিতে পারিনি। দিনের পর দিন বাড়ি ফিরতে পারিনি। আমার মনে হয়, সে কারণে ও ভেঙে পড়েছিল। আগের বিয়ে থেকে একটা শিক্ষাই পেয়েছি, মহিলাদের স্বাবলম্বী হওয়া উচিত।

আর হিরোমির যুক্তি, তার স্বামী বাড়িতে থাকলে স্বাধীনভাবে অনেক কিছুই করতে পারেন না। অস্বস্তিতে পড়েন। সে কারণে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তে তারা ভাল রয়েছেন।

হিরোমি এবং হিদেকাজ়ুর একটি সন্তানও রয়েছে। সে মায়ের কাছে থাকে। সপ্তাহে দু’-তিন বার হিরোমির বাড়িতে আসেন হিদেকাজ়ু। সাধারণত যখন সন্তানকে দেখভালের জন্য কাউকে প্রয়োজন হয় হিরোমির, তখনই সাহায্য করতে আসেন হিদেকাজ়ু। হিরোমি কোনও কাজে শহরের বাইরে গেলে, বা দীর্ঘ সময় বাড়ির বাইরে থাকলে, সে সময় সন্তানের খেয়াল রাখেন হিদেকাজ়ু।

হিরোমি জানিয়েছেন, তাদের প্রতিবেশীরা ভাবেন, দুজনের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। সেই নিয়ে কানাঘুষোও শুনতে পাওয়া যায় পাড়ায়। তবে তারা এ সবে কান দেন না। তারা দুজনেই মনে করেন, বিয়ে করলেই একসঙ্গে থাকতে হবে, এমন কোনও কথা নেই। একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধা থাকাটাই জরুরি। একে অন্যের ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে সম্মান করা দরকার।

হিরোমি বলেন, এক সঙ্গে থাকাটা জরুরি নয়। আমার স্বামী এবং আমি, দুজনেই নিজেদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, বিয়ের পর এ ভাবেই আলাদা থাকব দু’জন। স্বাধীন ভাবে নিজেদের জীবন যাপন করব। শুধু মানসিক ভাবে একে অন্যকে সহায়তা করে যাব। যাতে দু’জনেরই মনে হয়, মানসিক ভাবে আমরা নিরাপদে রয়েছি।

হিরোমি, হিদেরাজ়ুরা একা নন। জাপানে ক্রমেই বাড়ছে বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর স্বেচ্ছায় আলাদা থাকার প্রবণতা। মনস্তত্ত্ববিদেরা মনে করছেন, নারী এবং পুরুষের স্বাধীন থাকার প্রবৃত্তির কারণেই সে দেশে ‘বিচ্ছেদ বিবাহের’ চল বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকলেই ব্যক্তিগত পরিসর নিয়ে খুব সচেতন।

সমাজবিদেরা মনে করেন, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী আলাদা ছাদের নীচে থাকলে মহিলারা নিজের কেরিয়ারকে গুরুত্ব দিতে পারেন। বিয়ের জন্য কেরিয়ারের সঙ্গে আপসের প্রয়োজন হয় না। তবে এই ধরনের বিয়ের ক্ষেত্রে স্বামী, স্ত্রী দুজনেরই স্বাবলম্বী হওয়া প্রয়োজন।

অনেক স্বামী-স্ত্রীর ঠিকঠাক বনিবনা হয় না। অথচ চরম বিচ্ছেদের দিকে এগোতে চান না তারা। আইনি জটিলতার মধ্যে যেতে চান না। তাদের ক্ষেত্রে এই ‘বিচ্ছেদ বিবাহ’ সুবিধাজনক বিকল্প। সে কারণেই জাপানের তরুণেরা ঝুঁকেছেন এই দিকে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র : আনন্দবাজার

একুশে সংবাদ/এসআর
 

Link copied!