বৈবাহিক জীবন নিয়ে সংসদে ভুল তথ্য দেওয়ার অভিযোগে জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃণমূল এমপি নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সঙ্ঘমিত্রা মৌর্য।
আর তার সঙ্গেই শুরু হল নুসরাতকে ঘিরে নতুন বিতর্ক। গত ৯ জুন মিডিয়াকে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে তাঁর বিয়েই হয়নি, এদিকে লোকসভায় বিয়ে বাতিলের প্রতিলিপি জমা দিয়েছেন সপ্তাহ দুয়েক আগে। কোর্টে ম্যারেজ অ্যানালমেন্টের প্রক্রিয়া শুরু করেই লোকসভায় তিনি বিয়ে বাতিলের প্রতিলিপি পাঠান। তারপরই ৯ জুন মিডিয়ার কাছে বিবৃতি প্রকাশ করেন নায়িকা-সাংসদ।
১৯ জুন বসিরহাটের সাংসদের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারের দ্বারস্থ হন বিজেপি সাংসদ সংঙ্ঘমিত্রা মৌর্য। তাঁর অভিযোগ, নিজের বৈবাহিক জীবন নিয়ে লোকসভায় বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। ঘটনার তদন্ত করুক লোকসভার এথিকস কমিটি।
প্রসঙ্গত নুসরাতের মা হওয়ার খবর সামনে আসতেই তাঁর স্বামী নিখিল জৈন জানান তিনি নুসরাতের সন্তানের বাবা নন। বিবৃতি জানিয়ে তিনি এও জানান যখন থেকে বুঝতে পেরেছেন নুসরাত তাঁর সঙ্গে থাকতে চান না ঠিক সেই সময়ই ম্যারেজ অ্যানালমেন্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিখিল। সে প্রসঙ্গেই বিবৃতি জারি করে নুসরাত জানান যে বিয়ে বৈধ নয় তা বাতিল করার প্রয়োজনই নেই।
এরপরই জানা যায়, লোকসভার নথিতে তাঁর স্টেটাস 'বিবাহিত'। স্বামীর নামের জায়গায় জ্বলজ্বল করছে নিখিল জৈনের নাম। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে স্পিকারকে একটি চিঠি লেখেন উত্তরপ্রদেশের বদায়ুনের বিজেপি সাংসদ সংঙ্ঘমিত্রা মৌর্য। চিঠির সঙ্গে নুসরাতের লোকসভা প্রোফাইলও জুড়ে দেন তিনি। যেখানে স্বামী হিসেবে নিখিল জৈনের নাম উল্লেখ করেছেন তৃণমূল সাংসদ।
চিঠিতে মৌর্য অভিযোগ করে লেখেন, 'লোকসভায় শপথগ্রহণের সময়ও নিজেকে নুসরাত জাহান রুহি জৈন বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে নুসরাত যে বিবৃতি দিয়েছেন, তার সঙ্গে মিলছেনা না আগের তথ্য।' বিজেপি সাংসদ আরও জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জুন শাড়ি, সিঁদুর পরে হিন্দু নববধূর সাজে নুসরত লোকসভায় শপথ নিয়েছিলেন নুসরত।'
এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই দমদম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক সম্মেলনে নুসরাতের প্রসঙ্গে বিজেপির সমালোচনা করে বলেন,'শাখা, সিঁদুর নিয়েও আজকাল মন্তব্য় করছে বিজেপি, এটা কমপ্লেন করার কোনও বিষয়?' তৃণমূলের তরফে রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন-'এটি নুসরাত জাহানের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়. তিনিই সবচেয়ে ভাল উত্তর দিতে পারবেন। তবে বিজেপি কারোর ব্যক্তিগত জীবনে কীভাবে হস্তক্ষেপ করছে, দল এই বিষয়ে কোনও মতামত দেবে না, নুসরত একজন জনপ্রিয় অভিনেতা এবং জননেতাও বটে। '
বদায়ুনের বিজেপি সাংসদ জানান, ব্যক্তিগত জীবনে নুসরাত কী করছেন, তাতে কেউ নাক গলাচ্ছে না। তবে বৈবাহিক জীবন সম্পর্কে তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, লোকসভায় বিভ্রান্তিকর তথ্য পেশ করেছেন নুসরাত,যা অনৈতিক ও বেআইনি। তাঁর বিয়ের রিসেপশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি সঙ্ঘমিত্রা।
একুশে সংবাদ/ আরিফ