AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২০ মে, ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ডলারের কৃত্রিম সংকট, চড়া দামে বিক্রি


Ekushey Sangbad
জাহাঙ্গীর আলম
০৫:৫৫ পিএম, ৯ মে, ২০২৪
ডলারের কৃত্রিম সংকট, চড়া দামে বিক্রি

রাজধানীর খোলাবাজার ও মানি এক্সচেঞ্চ থেকে ডলার উধাও। পাওয়া গেলেই অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। রাজধানীর পল্টন এলাকার একটি মানি এক্সচেঞ্জে ডলার কিনতে যান ফরিদুল ইসলাম। সেখানে তিনি ডলার পাননি। মানি এক্সচেঞ্জে কর্মরত একজন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বিকেলে হয়েছে। এখনও সিদ্ধান্তই নিতে পারিনি কতো দামে বিক্রি করব। বিকেলের দিকে আসেন দেখি কি করা যায়। পরে তিনি চলে আসার সময় পেছন দিক থেকে ডাকা হয়। বলা হয় মামা যদি কিনতে চান এক দাম লাগবে ১২৫ টাকা। যদি নিতে চান তাহলে ওই চায়ের দোকানে আসেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর উত্তরা,মিরপুর,মতিঝিল, পল্টন, বাইতুল মোকাররম গুলশান, বনানী, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলারের দাম একদিনে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এখন আনুষ্ঠানিক ডলার রেট ১১৭ টাকা; যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দর। নিময় অনুযায়ী ব্যাংকগুলো ১১৮ টাকা বিক্রি করতে পারবে। হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ায় মানি চেঞ্জারগুলো ডলার বিক্রি করছে না। আবার যাদের কাছে খুচরা ডলার আছে তারাও বিক্রি না করে রেখে দিয়েছেন। কারণ যেহেতু আনুষ্ঠানিক ডলার রেট ৭ টাকা বেড়েছে খোলাবাজারে কত বাড়ে তা দেখার অপেক্ষায় আছেন সবাই। এমন পরিস্থিতির কারণে খোলাবাজারে বিক্রি শূন্য হয়ে গেছে ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এবিষয়ে বলেন, আমাদের খুচরা ডলার পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ রয়েছে। এখানে কে বিক্রি করবে কে করবে না এটা তার নিজস্ব বিষয়। যারা মানি এক্সচেঞ্জে ডলার পায়নি তারা ব্যাংকে গেলেই ডলার কিনতে পারবেন। ব্যাংকে এখন ৫০ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ক্যাশ ডলার মজুদ আছে। যার ডলার দরকার ব্যাংকে গেলেই পাবেন।

রোববার থাইল্যান্ড যাবে এমন একজনের সাথে কথা হয় মতিঝিলে। তিনি বলেন, আজকে ৫০০ ডলার কিনতে এসেছি। কমপক্ষে ৬টি মানি এক্সচেঞ্জে ঘুরলাম কেউ ডলার বিক্রি করলো না। এখানে এক্সিম ও অগ্রণী ব্যাংকে গেলাম ভিসা পাসপোর্ট দেখালাম-তারপরও বলল সরাসরি ডলার দেওয়া যাবে না। পরে ইউসিবির এক পরিচিত ব্যাংকারকে ফোন দিলাম, বলল অ্যাকাউন্ট না থাকলে সহজে ডলার বিক্রি করতে চায় না ব্যাংক। এরপরও যেতে বলল কোনো ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখবে।

তবে সরকারি বেসরকারি বেশ কয়েকটি ব্যাংকে ট্রাজারি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব শাখায় ডলার আছে তারা খুচরা ডলার বিক্রি করছে। তবে যে কেউ গেলেই ডলার পাবে না- নিজস্ব ও পরিচিত গ্রাহককেই শাখাগুলো ডলার দিচ্ছি। আজকে বেশিরভাগ ব্যাংক খুচরা প্রতি মার্কিন ডলার বিক্রি করছে ১১৮ টাকায়।  

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তে দীর্ঘদিন ১১০ টাকায় বেধে রাখার পর বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের অফিসিয়াল রেট একদিনে ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকায় উন্নীত করেছে। এর ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার বড় অবমূল্যায়ন করা হয়।

এ বিষয় সার্কুলার জারি করে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন করেছে। ক্রলিং পেগ পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী একটি দাম নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে এই দরের আশপাশে স্বাধীনভাবে লেনদেন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মধ্যবর্তী এই দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা।

সংশিষ্টরা জানান, এতদিন ১১০ টাকা ডলার রেট বেধে দেওয়া থাকলে ১১৭-১১৮ টাকার মধ্যে ডলার কেনাবেচা হয়েছে। যদিও নথিপত্রে দেখানো হয়েছে ১১০ টাকা। নতুন ঘোষণায় বিদেশে থাকা অর্থ স্থানান্তর প্রতিষ্ঠানগুলো ডলারের দাম বাড়িয়ে দেবে কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

দেশে ডলারের সংকট চলছে। ডলারের দাম ৮৫ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকা হয়েছে। এতে করে বেড়েছে আমদানি করা পণ্যের দাম, ফলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দীর্ঘদিন ধরে ৯ শতাংশের ওপর অবস্থান করছে। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ঋণের সুদ ও ডলারের দাম বাড়লে তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করবে।

এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে আমদানি ও রপ্তানি থেকে শুরু করে সাধারণ গ্রাহকের কাছে কত দরে ডলার কেনা-বেচা করা হবে, তা ঠিক করত বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)। এখন থেকে ডলারের দাম নির্ধারণে বাফেদা বা এবিবির কার্যত কোনো ভূমিকা থাকবে না বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। এসময় কিছু নীতি সংস্কারসহ বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়। ঋণ কর্মসূচি শুরুর পর দুই কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলারের বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় কিস্তিতে ৭০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা আগামী মাসে। তার আগে পর্যালোচনা বৈঠক করতে ঢাকায় আসে আইএমএফের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

খোলাবাজারে ডলার বিক্রি করেন এমন একজনের কাছে ডলারের রেট জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিনবেন না কি বিক্রি করবেন? কিনবো বললে  সে জানায় ডলার নেই,  যদি বিক্রি করেন তাহলে ১১৯ টাকা রেট দিব! কিনার রেট  জানতে চাইলে বলেন ডলার নেই, রেট দেব কিভাবে?

মতিঝিল পাইওনিয়ার মানি এক্সচেঞ্জে আজকের ডলার বিক্রির রেট জানতে চাইলে, সেখানে দায়িত্বরত কর্মী জানান ডলার নেই, তাই রেট বলা যাচ্ছে না। কেউ বিক্রি করলে ১১৭ টাকা ২০ পয়সা পাবে। হঠাৎ ডলার না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাল বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম একবারে ৭ টাকা বাড়িয়েছে তাই এ অবস্থা হয়েছে।    


একুশে সংবাদ/ন.প্র/জাহা 

Link copied!