সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলে পণ্য পরিবহণে এখনও ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহৃত হচ্ছে। কাজিপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া নামক স্থান রুপসার দক্ষিণ পাড়ায় পাকা সড়কে ছোট ট্রলি গাড়ি চললেও কৃষিপণ্য সহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার বেশি লক্ষ্য কার যাচ্ছে। দূর্গম ও বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের জনপদটিতে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল আনা নেওয়া করা হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি নামক বাহনটিতে। জেলা সদরের কাওয়াখোলা, মেছড়া, কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া, তেকানী, চূরগিরিশ, নিশ্চিন্তপুর - ইউনিয়নগুলির চরাঞ্চলের কাঁচা-পাকা সড়কগুলির নিত্যপণ্য পরিবহনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। জনপদটির প্রায় ১৭টি নৌকা ঘাট থেকে বিভিন্ন মালামাল পরিবহনে ব্যস্ত শতশত ঘোড়ার গাড়ির মালিক। রোদ-বৃষ্টি ঝড় বাদল উপেক্ষা করে ঘোড়ার গাড়ি মালিক মালামাল পৌঁছে দিচ্ছে নদীর ঘাট থেকে বিভিন্ন বাজার-হাটে অথবা গ্রামে। আবার গ্রাম থেকে নদীর ঘাটে। কাজিপুর এলাকার নাটুয়ারপাড়া হাটে, দেশের কুড়িগাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের শতশত মন কৃষিপণ্য হাটাতে ক্রয়-বিক্রয় হয়। কাজিপুর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে গড়ে উঠেছে মালামাল মজুদের গোডাউন। ক্রয় কৃত মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত হচ্ছে।
ভাঙ্গা চোরা চরের মেঠো পথে ও ধূ ধূ বালিকণার মধ্যে দিয়ে তৎকালীন আমল থেকে আজও ঘোড়ার গাড়ি নামক বাহনটি। প্রতিটি ঘোড়ার গাড়ির মালিক প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৮শত টাকা থেকে ২ হাজার টাকা আয় করেন বলে জানান রুপসা এলাকার ঘোড়ার গাড়ির মালিক রহমত আলী।
তিনি আরও বলেন প্রতিটি ঘোড়ার গুড়া, খইল, ভূসি বাাাবিদ খাওয়ানো খরচ পড়ে ২শত ৫০ টাকা থেকে ৩শত টাকা। চরাঞ্চলের বালু মাটি হওয়ায় খুব সহজেই ঘোড়ার গাড়িতে বিভিন্ন স্থানে মালামাল পরিবহন করা যায়। সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলগুলিতে ঘোড়ার গাড়িতে মালামাল পরিবহনে যেমন জনপদের ব্যবসায়ী, আড়ৎদার, মুজতদার সহ কৃষকদের উপকার হচ্ছে। দ্রুত এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ঘোড়ার গাড়ির মালিক জীবন জীবিকার তাগিদে মালামাল পরিবহন করে অর্থ উপার্জন করছেন। অন্যদিকে দূর্গম বালু কণাময় এলাকার মানুষজন নিত্য দিন উপকৃত হচ্ছেন।
একটি ঘোড়ার গাড়ি তৈরী করতে ৬৫-৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়। চরাঞ্চলের জনপদটিতে যমুনা নদীর বন্যার পানির কারণে আবাদ যোগ্য ভূমিতে ফি বছর পলিমাটি পড়ার কারনে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
কৃষি ফসলের মধ্যে ধান, গম, তিল, তিশি,কাউন, ভূট্টা, পিয়াজ, বাদাম, পিয়াজ, রসুন ও পাট ইত্যাদি উল্লেখ যোগ্য ফসলে বাম্পার ফলন হয়। আর তাই এ জনপদের কৃষক হচ্ছেন স্বাবলম্বী । ঘোড়া নামক বোবা প্রাণিটি কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পেড়িয়ে গেলেও ঘোড়ার গাড়ির বাহন হয়ে ঘোড়াটির মালিকের পাশা- পাশি। হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করছে প্রতিদিন। এভাবে চরাঞ্চলের ঘোড়ার গাড়ি দের শতাধিক মালিক নিত্যপন্য পরিবহনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঘোড়ার গাড়ির মালিক। এটাই তাদের রুজি রোজগারের অবলম্বন এতে কোন সন্দেহ নাই। এরা শরীরের ঘাম হালাল রুজি উপার্জন করে পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে-শান্তিতে রয়েছেন বলে জানালেন নাটোয়ারপাড়ার ঘোড়ার গাড়ির মালিক সুজন মিয়া।
একুশে সংবাদ/ এমএইচ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

