দুই দিন ধরে চলা বৈরী আবহাওয়া ও অবিরাম বৃষ্টির কারণে শেরপুরের শ্রীবরদীতে আমন ধানক্ষেতে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। ঝড়ো হাওয়ায় অনেক ধানগাছ হেলে পড়েছে, আবার কাটা ধান বিছিয়ে রাখার পর তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে ঘরে ফসল তোলার আগ মুহূর্তে শত শত কৃষকের কপালে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সোনালি ধানগাছ দোল খাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। নিচু এলাকার অনেক মাঠ তলিয়ে গেছে, কাটা ধানে গজিয়েছে গেজ। ফলে ধান নষ্ট হয়ে পড়ছে।
রবিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বইছে। এতে অনেক স্থানে ধানগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে, কোথাও আবার পানির নিচে তলিয়ে গেছে। খুব শিগগিরই আমন ধান কাটার মৌসুম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, বর্তমান আবহাওয়া কৃষকদের মুখে চিন্তার ছাপ ফেলেছে।

উপজেলার হালুয়াহাটি ও মালাকোচা গ্রামের কৃষক সোহেল রানা বলেন, “কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটা শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়ে যাওয়ায় ধানগাছ হেলে পড়েছে। খেতে বিছানো ধান নষ্ট হচ্ছে। জমিতে পানি জমে গেছে, ধান ঝরে পড়ছে। এখন ধান কেটে ঘরে তোলা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় শ্রমিক খরচও বেড়ে গেছে।”
বালিজুরী গ্রামের কৃষক কবির বলেন, “এখন ধান কেটেও শুকানো সম্ভব নয়। ভেজা ধান ঘরে তোলা কষ্টকর। রোদ না উঠলে ধান পচে যাবে। ফলে আবাদে যে টাকা খরচ করেছি, তা উঠবে না বলে আশঙ্কা করছি।”
এছাড়া উপজেলার আরও কয়েকজন কৃষক জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে ফসল নষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে নিচু জমির ধান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক কৃষক বলেন, “যদি এই ধান ঘরে তুলতে না পারি, তাহলে পরিবার নিয়ে খেয়ে বাঁচব কীভাবে বুঝতে পারছি না। এখন খুব চিন্তায় আছি।”
শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান আকন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, “বৃষ্টিতে যাতে কাটা ধান নষ্ট না হয়, সে জন্য কৃষকদের পানি থেকে ধান উঠিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব জমিতে ৭০-৮০ ভাগ ধান পেকে গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে এলেই দ্রুত কেটে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

