রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট এলাকার নাবিল গ্রুপের মালিকানাধীন নাবা ফার্ম থেকে উৎপন্ন মুরগির বর্জ্য (লিটার বা বিষ্ঠা) নিয়মিতভাবে গভীর রাতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে তানোর উপজেলার মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের পুকুর ও রাস্তার ধারে। এতে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে মারাত্মক দুর্গন্ধ, দূষিত হচ্ছে পানি, মারা যাচ্ছে মাছ, এমনকি বন্ধ হয়ে গেছে চাষাবাদ—এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে কোম্পানির নিজস্ব ড্রাম ট্রাক দিয়ে বর্জ্য ফেলে চলে যান নাবিল গ্রুপের কর্মচারীরা। এর ফলে দুর্গন্ধে এলাকায় জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, “আমরা আগে এই পুকুরের পানি সেচ, রান্না ও গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন পানিটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। মাছ মরছে, জমিতে ফসল ফলছে না।”
এই বিষয়ে ২ নম্বর বাধাইড় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসগার আলী রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, কোম্পানির বর্জ্যবাহী ট্রাক আটকালে নাবিল গ্রুপের লোকজন স্থানীয়দের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
এর আগেও, গত জুলাই মাসের ৮ ও ৯ তারিখে স্থানীয়রা তানোর উপজেলার ব্রুরুজ এলাকায় দুটি বর্জ্যবাহী ট্রাক আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু তানোর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ চালকদের কাছ থেকে “আর বর্জ্য ফেলবে না” মুচলেকা নিয়ে ট্রাকগুলো ছেড়ে দেন।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসেই গোদাগাড়ী উপজেলা প্রশাসনের পরিচালিত মোবাইল কোর্ট নাবা ফার্মকে পরিবেশ দূষণের দায়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী নাঈমকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর তারা পুনরায় একইভাবে বর্জ্য ফেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) গভীর রাতেও মুরগির বিষ্ঠা ফেলে দেওয়া হয় তানোর উপজেলার মাড়িয়া জোকারপাড়া গ্রামের পাশের সড়কে। এতে পুরো গ্রামজুড়ে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা বলেন, “আমাদের ছেলেমেয়ে নিয়ে এই দুর্গন্ধে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বাতাস, পানি—সবকিছুই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তবে এখানে বসবাস করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।”
স্থানীয়রা রাজশাহী জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যেন নাবিল গ্রুপের বর্জ্য ফেলার এই পরিবেশবিধ্বংসী কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
একুশে সংবাদ/এ.জে
 
    
 
                        

 
                                         
                                             
                                                        
                             একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
												 
                                             
                                             
                                             
                                            
