ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে সোমবার (২৭ অক্টোবর) রেলস্টেশনে অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে ট্রেনের ইঞ্জিন ও দুটি বগির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনার পর ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. ইউছুফ বাদী হয়ে সোমবার রাতে রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই রাতেই রেলওয়ে পুলিশ সন্দেহভাজন তিন কিশোরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো—ফাহিম (১৬), আরমান (১৫) ও সাজন (১৭)। তিনজনেরই বাড়ি ভৈরব রেলস্টেশন সংলগ্ন পঞ্চবটি এলাকায়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমবার সকালে “ভৈরবকে ৬৫তম জেলা ঘোষণা”র দাবিতে স্থানীয় সংগঠন ‘পল্লী জাগরণী সংঘ’-এর সদস্যরা প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন লোক নিয়ে রেলস্টেশনে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। সকাল ১০টা ২৩ মিনিটে ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি স্টেশনের সামনে এলে আন্দোলনকারীরা লাল কাপড় দেখিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেন—যার ভৈরব স্টেশনে নির্ধারিত কোনো বিরতি ছিল না।
খবর পেয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম এবং পৌর বিএনপির সভাপতি হাজি শাহিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে ট্রেনটি ছাড়ার আগমুহূর্তে আন্দোলনকারীদের মধ্যে ১০০ থেকে ১৫০ জন দলবদ্ধ হয়ে ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগিতে পাথর নিক্ষেপ শুরু করেন।
এসময় স্টেশনে উপস্থিত যাত্রীসহ ট্রেনের যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পাথর নিক্ষেপে ট্রেনের ইঞ্জিন, কোচের লুকিং গ্লাস, একটি হেডলাইট, একটি সাইড গ্লাস, গার্ডরুম ও খাবার বগির জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। এতে আনুমানিক দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়। মামলায় ট্রেনের গার্ড সজিব চন্দ্র দাস, সহকারী গার্ড সফিকুল ইসলাম, এলএম আবদুল লতিফ ও কবির হোসেনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব রেলস্টেশনমাস্টার মো. ইউছুফ বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আমি মামলাটি করেছি। ট্রেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ, আর আন্দোলনকারীরা ট্রেনে পাথর ছুড়ে যে ক্ষতি করেছে, তা স্পষ্টভাবে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ।”
ভৈরব রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইদ আহমেদ বলেন, “রেলস্টেশনে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় স্টেশনমাস্টার বাদী হয়ে সোমবার রাতে ১০০ থেকে ১৫০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা (মামলা নং-৪) করেছেন। ওই রাতেই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

