গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার আজমতপুর কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির ফি অতিরিক্ত আদায় ও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেয়ার নামে ফি বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায় ছাড়াও কলেজের প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয়ে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কলেজ শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষে নিয়ামত আলী ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কলেজের এডহক কমিটি ও অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ জহিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপবৃত্তির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত ভর্তি ফি ১৫০০ টাকার স্থলে ৪৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া কলেজে নিয়মশৃঙ্খলা মানা হয় না, নির্ধারিত সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান হয় না, ১:৩০ মিনিটের মধ্যেই কলেজ ছুটি হয়, শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করা হয়, কলেজের আর্থিক ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা নেই এবং শিক্ষক-অভিভাবক গ্রুপিং বা দলাদলিতে শিক্ষার মান হ্রাস পাচ্ছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অপসারণ, অতিরিক্ত আদায়কৃত অর্থ শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়া এবং কলেজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রবিধানমালা ২০২৪ অনুচ্ছেদ ৬৭ অনুযায়ী বিশেষ পরিস্থিতি কমিটি গঠনের অনুরোধ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক বাদল সরকার জানান, “আমার মেয়ের ভর্তি বাবদ ৩৩০০ টাকা জমা দিয়েছি, আরও এক হাজার টাকা জমা দিতে হবে।”
আজমতপুর আদর্শ স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জহিরুল ইসলাম অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে প্রতিবেদককে বলেন, “এডহক কমিটির মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের নিকট ব্যাজ সোল্ডার ও ভর্তি ফি বাবদ ৪৩০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।”
অভিযোগ ও অনিয়ম বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম. কামরুল ইসলাম বলেন, “অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই-বাছাই পূর্বক প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. রিজাউল হক মুঠোফোনে বলেন, “সরকারি নির্দেশের বাইরে শিক্ষার্থীদের নিকট অতিরিক্ত অর্থ আদায় মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আর্থিক লেনদেন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় দেখবে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অভিভাবক ও সচেতন মহল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার পরিবেশ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানটির সুনাম হ্রাস পাচ্ছে। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে