বিলুপ্তপ্রায় ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি এখন আর কোথাও তেমন দেখা যায় না। সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে শখের বশে ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি কিনে এনেছেন কোটচাঁদপুর উপজেলার তালসার গ্রামের আসাদুল মন্ডল। দীর্ঘদিন পর এলাকায় ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি দেখতে পেয়ে খুশি হয়েছেন সব বয়সের মানুষ। সামনে ঘোড়ার টমটম গাড়ি চালুর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, একসময় গ্রাম-গঞ্জের মানুষের প্রধান বাহন ছিল ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। কালের বিবর্তনে সেই স্থান দখল করেছে মোটরসাইকেল, আলমসাধু, ইজিবাইক ও ইঞ্জিনচালিত ভ্যান। ফলে আজকাল এ বাহন আর চোখে পড়ে না। শনিবার বিকেলে তালসার গ্রামের মাঠে দেখা মেলে ঘোড়া ও তার মালিক আসাদুল মন্ডলের।
তিনি বলেন, “ঘোড়া গাড়ি ছিল মানুষের ঐতিহ্যবাহী বাহনের অন্যতম। যুদ্ধক্ষেত্রেও রাজা-বাদশাহরা ঘোড়াকে বাহন হিসেবে ব্যবহার করতেন। তাই অনেকটা শখের বশেই ঘোড়াটি কিনেছি। নতুন প্রজন্মের কাছে ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি অপরিচিত হওয়ায় তারা এটি দেখে খুব আনন্দ পাচ্ছে। এজন্য প্রায়ই মানুষের ভিড় জমে আমার বাড়িতে।”
আসাদুল জানান, ঘোড়ার সঙ্গে গাড়িও কিনেছেন, যা দিয়ে মালামাল পরিবহন করছেন। এতে ভালো আয়ও হচ্ছে। এলাকায় আর কারও কাছে ঘোড়ার গাড়ি না থাকায় অনেকেই খুশি মনে পরিবহনের জন্য তার কাছে আসছেন।
তিনি আরও বলেন, “যত্রতত্র ঘোড়ার হাট বসে না। খুলনা বিভাগে দুটি ঘোড়ার হাট রয়েছে— একটি কুষ্টিয়ার পান্টি ও অন্যটি খুলনার চাঁদখালি। আমি কুষ্টিয়ার পান্টি হাট থেকে ৪২ হাজার টাকায় ঘোড়া ও গাড়ি কিনেছি।”
মূলত আলমসাধু চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও ঐতিহ্য ধরে রাখতেই শখের বশে ঘোড়া কিনেছেন আসাদুল। ভবিষ্যতে টমটম গাড়ি বানানোর ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন তিনি। আসাদুল মন্ডল তালসার গ্রামের মৃত মোগবুল মন্ডলের ছেলে।
স্থানীয় বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম খোকা বলেন, “আগের দিনে আমাদের প্রধান বাহনই ছিল ঘোড়া ও গরুর গাড়ি। এখন আর চোখে পড়ে না। আসাদুল ঘোড়া কিনে আনার পর মানুষ ভাড়া করেও মালামাল পরিবহন করছে।”
কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, “বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী সংরক্ষণে কাজ করে চিড়িয়াখানাগুলো। উপজেলা পর্যায়ে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই।”
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে