গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বন্ধ কারখানায় ডাকাতির চেষ্টাকালে ৬ ডাকাতকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। সোমবার (২৮ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাওনা-বরমী সড়কের বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল বারিক নিশ্চিত করেছেন।
আটক ডাকাত সদস্যরা হলেন—ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বাঘটিয়া গ্রামের ইদ্রীস আলীর ছেলে সোহেল মিয়া (৩২), তারাকান্দা উপজেলার ইসমাইল হোসেনের ছেলে এমদাদুল হক (৪৫), নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আলম হোসেনের ছেলে আরিফ (৩০), বগুড়ার নন্দিগ্রাম উপজেলার কামুলা গ্রামের সোহরাব হোসেনের ছেলে ফারুক (৩২), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার বালুর মাঠ গ্রামের সাহা আলমের ছেলে সীমান্ত (২১) এবং চাঁদপুরের মতলব উপজেলার মতলবপুর গ্রামের গোদা মোল্লার ছেলে ইব্রাহীম (২৩)।
বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নাজমুল আকন্দ রনি জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ১০-১২ জনের একটি ডাকাতদল পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় প্রবেশ করে। তারা কারখানার এক নিরাপত্তা কর্মীকে হাত-পা বেঁধে মারধর করে। এ সময় সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীরা চিৎকার শুনে গ্রামবাসীকে খবর দেন। পরে গ্রামবাসী কারখানাটি ঘিরে ফেললে ডাকাতরা পেছনের সীমানা প্রাচীর টপকে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় ৬ জন ডাকাতকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মকবুল হোসেন বলেন, “ডাকাতরা সীমানা প্রাচীর টপকে ভিতরে প্রবেশ করে আমার হাত-পা বেঁধে ফেলে। আমি চিৎকার করলে গ্রামবাসী বাইরে থেকে কারখানাটি ঘিরে ফেলে এবং পালানোর সময় ৬ জনকে ধরে ফেলে।”
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আজগর হোসেন সোহাগ জানান, “গতকাল মধ্যরাতে পুলিশ আহত অবস্থায় ৬ ডাকাতকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের মধ্যে চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুল হককে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
শ্রীপুর থানার ওসি মো. আব্দুল বারিক বলেন, “পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ডাকাত দলটি যন্ত্রপাতি লুটের উদ্দেশ্যে সেখানে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা ৬ ডাকাতকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তারা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য।”
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নাজমুল আকন্দ রনি আরও বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের ভাগ্নে এই পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানার মালিক। গত ৫ আগস্ট থেকে কারখানাটি বন্ধ রয়েছে।”
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে