রাজশাহীর তানোর উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ ওয়েল্ডিং কারখানা। পরিবেশ আইন না মেনে গড়ে ওঠা এসব কারখানার কার্যক্রমে অতিবেগুনি আলোক রশ্মি চোখে প্রবেশ করে রেটিনায় ক্ষতি করছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। রাস্তার ধার ঘেঁষে খোলা জায়গায় ঝালাইয়ের কাজ চলায় বিকিরণ ও উচ্চ শব্দে বিপদে পড়ছে কোমলমতি শিশু, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, পথচারী, বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও বয়স্করা। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।
তানোর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, থানা মোড়, সিনেমা হল মোড়, কালীগঞ্জ, চান্দুড়িয়া, সরনজাই, কলমা বিল্লি বাজার, মুন্ডুমালা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ ওয়েল্ডিং কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় অনেক যুবক ছাড়াও শিশু ও কিশোররা কাজ করছেন। দিন-রাত জনসমক্ষে খোলা জায়গায় চলছে ওয়েল্ডিংয়ের ঝালাইয়ের কাজ। এসব দেখার যেন কেউ নেই। কারখানাগুলোতে লোহার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি তৈরি ও জোড়া দেওয়ার কাজ হচ্ছে।
এছাড়া প্রশাসনের তোয়াক্কা না করে সড়কের দুই পাশে দখল করে গাড়ি মেরামত, ঝালাই ও রঙের কাজও করা হচ্ছে। দোকানের সামনেই রড, জানালার গ্রিল ও অন্যান্য মালামাল রেখে ফুটপাত পুরোপুরি দখল করে চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো হচ্ছে। এতে সড়কজুড়ে যেমন পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে, তেমনি সাধারণ মানুষকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
কয়েকজন সচেতন নাগরিক জানান, প্রশাসন যদি তৎপর হতো, তাহলে মালিকরা এত খোলাখুলিভাবে অবৈধ কারখানা চালাতে পারত না। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা কৌতূহলবশত ওয়েল্ডিংয়ের কাজ দেখার ফলে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। শিশু শ্রমিক ও কর্মরত যুবকরাও চোখে সুরক্ষামূলক কালো গ্লাস না পরে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, ওয়েল্ডিং কাজের সময় তীব্র আলোর বিচ্ছুরণ রোধে আড়াল দিয়ে কালো কাপড় টাঙিয়ে কাজ করার কথা।
এই প্রসঙ্গে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বারনাবাস হাসদাক বলেন, “ওয়েল্ডিংয়ের অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি চোখে প্রবেশ করলে রেটিনা ও লেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়ে ধীরে ধীরে অন্ধত্ব পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া চোখে জ্বালা, ব্যথা, পানি পড়া ও অন্যান্য জটিলতাও দেখা দিতে পারে।”
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে