গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় গোপনে স্কুলছাত্রীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে রায়হান মিয়া (২০) ও শাকিল আহমেদ মিম (২৫) নামের দুইবন্ধু মিলে ওই ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় গত ২৭ জুন ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ধর্ষক দুইবন্ধুর নামে সংশ্লিষ্ট ধারায় থানায় একটি মামলা রুজু করেন।
রবিবার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাদুল্লাপুর থানার ওসি তাজউদ্দিন খন্দকার।
ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর বাড়ি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে হলেও তিনি ছোটবেলা থেকে নানার বাড়ি থেকে লেখাপড়া করেন।
স্থানীয়রা জানান, ধর্ষিতা ছোটবেলা থেকে তার নানার বাড়ি উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের মধ্যভাঙ্গা মোড় গ্রামে নানাবাড়ি থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টটম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে ।
ধর্ষক রায়হান মিয়া ওই গ্রামের মিলন প্রামানিকের ছেলে ও শাকিল আহমেদ মিম কান্তনগর বাজারের সাজু মিয়ার ছেলে।
মামলার বর্ণিত সূত্রে জানা যায়, গত রমজান মাসের কোনো এক সময় ওই ছাত্রী তার নানাবাড়িতে নলকুপে গোসল করছিলেন। এ সময় রায়হান মিয়া কৌশলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ধর্ষিতার গোসলের আপত্তিকর ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এরপর সেই ধারণকৃত ভিডিওটি ধর্ষিতাকে দেখানো হয়। ভিডিওটি দেখার পর সে রায়হানের হাতে পায়ে ধরে তা মুছে ফেলার অনুরোধ করে।
এরই মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল রাতে ভিডিওটি মুছে ফেলার আশ্বাস দিয়ে মেয়েটিকে অনেকটা বেকায়দায় ফেলে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে রায়হান মিয়া। এমন আশ্বাস দিয়ে আবারও ১৯ এপ্রিল তাকে ধর্ষণ করে রায়হান। বিদ্যমান এ পরিস্থিতিতে ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য ধর্ষক রায়হান হুমকি দিয়ে বলে, ঘটনাটি কাউকে জানালে ধারণকৃত ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এদিকে ঘটনার কয়েকদিন পর আপত্তিকর সেই ভিডিও রায়হান মিয়া তার বন্ধু শাকিল আহমেদ মিমের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
এমতবস্থায় সেই সুযোগে বন্ধু রায়হানের পন্থা অবলম্বন করে ২৪ জুন শাকিল ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে । ঘটনার একপর্যায়ে হঠাৎ মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে অঝোরে কান্নাকাটি শুরু করলে স্বজনরা তার কান্নার কারণ জানতে চান।
পরে সে ঘটনার যাবতীয় বিষয় স্বজনদের কাছে প্রকাশ করে। চাঞ্চল্যেকর ঘটনাটি জানাজানি হলে গোটা এলাকায় সমলোচনার ঝড় শুরু হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের জোর প্রচেষ্টা চলছে।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে