বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সক্রিয় উদ্যোগে রাঙামাটির বাঘাইহাট বাজার বর্জনের অবসান ঘটেছে। দীর্ঘ এক মাস ধরে চলা এ বর্জন আজ প্রত্যাহার করেছে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় সমস্যাটির শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়েছে।
বাঘাইহাট জোনের জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাসুদ রানা পিএসসি-র উদ্যোগে সোমবার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত এক সমন্বয় সভায় গঙ্গারাম ও মাচালং এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় পাহাড়িরা বাজারে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ৩৫নং বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানোজ্যোতি চাকমা, ৩৬নং সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা, বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন, কাঠ মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন (পিচ্চি) সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
২২ জুন থেকে স্বাভাবিক বেচাকেনা শুরু
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২২ জুন রবিবার থেকে বাঘাইহাট বাজারের সাপ্তাহিক হাট আবারও চালু হবে এবং স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালি সব জনগোষ্ঠী স্বাভাবিকভাবে বেচাকেনায় অংশ নেবে। বাজার কার্যক্রম সপ্তাহের অন্যান্য দিনেও চলবে।
দীর্ঘদিনের সমস্যা, সেনাবাহিনীর স্থায়ী সমাধান
জোন কমান্ডার মো. মাসুদ রানা জানান, বাঘাইহাট জিপ মালিক সমিতির সঙ্গে বিরোধের কারণে স্থানীয় পাহাড়িরা বাজার বর্জন করেছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রতিনিধিরা একাধিকবার বসেও সমাধানে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে। সেই ধারাবাহিকতায় আমরা এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করেছি। ভবিষ্যতে যাতে এমন সংকট না ঘটে, সে দিকেও আমরা লক্ষ্য রাখব।”
স্থানীয়দের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, “ত্রিশ বছর ধরে আমি বাঘাইহাট বাজারের সাথে যুক্ত। অতীতে বাজার প্রায় দশ বছর বন্ধ ছিল। তখনও সমাধানে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। জোন কমান্ডারের এই দায়িত্বশীল উদ্যোগ ছাড়া হয়তো পরিস্থিতি আবারও জটিল হতো।”
সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, “বাঘাইহাট জোনে অনেক অফিসার এসেছেন, কিন্তু বর্তমান জোন কমান্ডারের মতো আন্তরিক এবং শান্তিপূর্ণ সমাধানকারী খুব কম দেখেছি। তিনি কারও উপর চাপ না দিয়ে হাসিমুখে সমস্যার সমাধান করেছেন।”
সভায় উপস্থিত অন্যান্য ব্যক্তিরাও সেনাবাহিনীর উদ্যোগে গৃহীত সিদ্ধান্তে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
গৌরবের দিন সাজেকবাসীর জন্য
স্থানীয়রা মনে করছেন, এই সমাধান সাজেকবাসীর জন্য একটি গৌরবময় ও আশাব্যঞ্জক দৃষ্টান্ত। সকল পক্ষের সহযোগিতায় সৃষ্ট শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বাজার কেন্দ্রিক অর্থনীতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে আরও দৃঢ় করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে