AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আবারো নির্বিচারে পাহাড় কাটছে কেইপিজেড, হুমকিতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য



আবারো নির্বিচারে পাহাড় কাটছে কেইপিজেড, হুমকিতে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল (কেইপিজেড) আবারো নির্বিচারে পাহাড় কেটে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি পাহাড় কাটার সময় ধসের ঘটনায় প্রাণহানি ঘটলেও, সেই ঘটনার পর থেমে থাকা কার্যক্রম আবারও পুরোদমে শুরু হয়েছে।

গত ১ মে খেলতে গিয়ে পাহাড় ধসে মাটিচাপা পড়ে ২ জনের মৃত্যু ও ২ জন আহত হওয়ার পর কাজ বন্ধ থাকলেও, গত শনিবার (৮ জুন) থেকে দক্ষিণ বৈরাগ ব্লকে পুনরায় পাহাড় কাটা শুরু করে কেইপিজেড কর্তৃপক্ষ। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড় কাটা এলাকায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এস্কেভেটর দিয়ে উঁচু পাহাড় কেটে সমতল করা হচ্ছে, যা বিলুপ্তির মুখে ঠেলে দিচ্ছে ঐতিহাসিক দেয়াং পাহাড়কে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পাহাড় কাটা বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও কেইপিজেড একের পর এক আইন লঙ্ঘন করে চলেছে। কখনো রাতের আঁধারে, আবার কখনো দিনের আলোয় পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে করে বনজ সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে, বসবাসকারী বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসছে, জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে, এবং হাতির আক্রমণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। গত ৮ বছরে আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে বন্য হাতির আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন নারী, শিশু ও বৃদ্ধ।

১৯৯৬ সালে কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান কর্পোরেশন ২,৪৯২ একর জমির উপর কেইপিজেড স্থাপন করে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, কোনো পাহাড় কাটা যাবে না এবং যতটুকু জমি আছে, সেখানে সবুজায়নসহ সংরক্ষণ করে কারখানা স্থাপন করতে হবে। অথচ বারবার এই শর্ত ভঙ্গ করেই চলছে কার্যক্রম।

২০০৯ সালের ২৩ নভেম্বর হাইকোর্ট শুধুমাত্র “পাহাড় ড্রেসিং”-এর অনুমতি দিলেও সম্পূর্ণ পাহাড় ধ্বংস করার অনুমতি দেয়নি। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানিয়ে অনুমতি নিয়ে তবেই কাজ করার কথা, কিন্তু বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না।

২০১২ সালে পাহাড় কাটার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর কেইপিজেডের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধি অনুযায়ী, ৩৩% জমিতে বনায়ন, ১৯% জলাধার ও খোলা স্থান হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। এতে কারখানা নির্মাণের জন্য প্রাপ্য জমি দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৮৪০ একর। এসব শর্ত লঙ্ঘনের কারণে একটি সময় সরকার তাদের ৫০০ একর জমির মালিকানা দিয়ে বাকি জমি ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

সম্প্রতি অন্তবর্তী সরকার পুনরায় পুরো জমির মালিকানা বুঝিয়ে দেয় এবং কেইপিজেড চেয়ারম্যান কিহাক সাং-কে সম্মানসূচকভাবে বাংলাদেশের নাগরিকত্বও প্রদান করা হয়।

পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে কেইপিজেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, “আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি নিয়েই কাজ করছি। এগুলো পাহাড় নয়, টিলা। টিলা সমতল করা হচ্ছে।”

তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিদর্শক মো. মঈনুদ্দিন ফয়সালের কাছে ফোনে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে ফোন কেটে দেন।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, “কেইপিজেড পাহাড় কাটছে কি না, এবং তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়েছে কি না—তা আমরা যাচাই করে দেখব।”

 


একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!