রাজবাড়ী সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে শাহীন শেখ ওরফে রুপল শেখ (২৭) নামে এক ভ্যানচালককে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত রুপল শেখ একই গ্রামের জিন্নাহ শেখের ছেলে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজবাড়ী সদর আমলি আদালতে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন নিহতের মা রাবেয়া বেগম।
মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন মৃত তমিজ উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে মো. শামসুদ্দিন বিশ্বাস ওরফে শাম (৫৭), রুকমান বিশ্বাসের ছেলে মো. জহিরুদ্দিন বিশ্বাস (৬৫), মোক্তার বিশ্বাস (৪৫), রিপন বিশ্বাস ওরফে কচি (৪৫), রাফিজুল বিশ্বাস (২৫), অন্তর বিশ্বাস (১৯), সৌরভ বিশ্বাস (২২), রাসেল মোল্যা (২২), মকিম বিশ্বাস (৫৪), সোমা বিশ্বাস (২৭), রাহেলা বেগম (৪০), তন্দ্রা বেগম (২২) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৬ মে বিকেলে একটি গ্রাম্য সালিশ বসানোর কথা ছিল। ওইদিন বিকেল ৫টার দিকে রুপল শেখকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়া হয়। পরে শামসুদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ির আঙিনায় তাকে চুরির অভিযোগ ও গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ধারণের অপবাদ দিয়ে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। তার শরীরে ড্রিল মেশিন চালিয়ে ছিদ্র করে ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত রুপলের মামা মো. কালাম মোল্লা প্রথমে ১৭ মে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন, যেখানে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই মামলায় পুলিশ চারজনকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার করে এবং পরবর্তীতে আরও একজনকে আটক করে। তবে পরে কালাম মোল্লা গণমাধ্যমকে জানান, তিনি নিজে থেকে কোনো মামলা করেননি যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
এদিকে, ১৮ মে রাজাপুর গ্রামে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভকারীরা রাফিজুল বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় সাদা পোশাকে উপস্থিত তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাব্বির হোসেনের সঙ্গে তর্কাতর্কির পর তার ওপর হামলা হয়। পরে ওই ঘটনার জেরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রাজবাড়ী বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বাচ্চু জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সদর থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
একুশে সংবাদ /রা.প্র/এ.জে