ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের সামনে দিয়ে বহমান জঙ্গলাকীর্ণ ভুবেনশ্বর নদটি আগামী শুক্রবার পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন ইউএনও মনিরা খাতুন।
উক্ত নদটি দীর্ঘকাল ধরে কচুরীপানা ও জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থায় পরিত্যক্ত জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। এ জঙ্গলাকীর্ণ নদটি এখন মশা-মাছি ও সাপ কোপের আবাসস্থলে পরিণত হয়েছে। নদটি ‘পাড়ঘেঁষে রয়েছে হাট বাজার, কল কারখানা, দোকানপাট ও অনেক হোটেল রেস্টুরেন্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা, মলমূত্র ও পচাগলা ফেলে বিপন্ন করে তুলেছে উপজেলার পরিবেশ। তাই এক কালের আশীর্বাদপুষ্ট ভুবেন্বশ্বর নদটি এখন উপজেলাবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘকাল পরে উক্ত নদের দূষণ থেকে উপজেলাবাসীকে রক্ষার জন্য আগামী শুক্রবার পরিচ্ছন্ন অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছেন ইউএনও মনিরা খাতুন। তিনি মনে করেন, উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবহমান নদটি সংস্কারের আগে দরকার পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা। সেই সুবাদে তিনি স্থানীদের সাথে দফায় দফায় সভা ও পরামর্শ করে নদটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, নদটির মধ্যের কচুরীপানা ও গহীন জঙ্গল পরিষ্কারের জন্য শুক্রবার বিডিক্লিন থেকে প্রায় দুই হাজার লোক ভাড়া করা হয়েছে। নদের জঙ্গল, কচুরীপানা ও ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে তা অন্যত্র পদ্মার পারে কোনো পতিত জমিতে ফেলার জন্য ৪টি ভেকু মেশিন ও ১০টি ট্রাক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সাথে বিডি ক্লিনের লোজনের খাবার দাবার ও বিশ্রামাগার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ পরিচ্ছন্ন অভিযান সুষ্ঠুও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য স্থানীয় সর্বমহলের সহায়তা কামনা করেছেন ইউএনও।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এ নদটি উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে জেলা শহরের টেপাখোলা লেকপাড় পর্যন্ত প্রায় ৩০ কি.মি. এলাকা নিয়ে বিস্তৃত। আবহমান কাল ধরে এ নদ দিয়ে ছোট-বড় নৌকা চলাচল, এলাকাবাসীর মাছের অভাব পূরণ, গোসলকার্য, সেচ ও কৃষি জমির উর্বরতা ফিরিয়ে দিত।
এছাড়া বর্ষাকালে বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে নৌকা বাইচ ও সাঁতার প্রতিযোগিতাসহ নানা উৎসবে মেতে উঠত গ্রামবাসী। কালের বিবর্তনে পলি মাটি পড়ে নদটির নাব্য হারাতে থাকে। একই সাথে বর্ষার স্রোতে কচুরীপানা ও তৃণলতাদি ভেসে এসে জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থার রূপ নেয় নদটি। ফলে উপজেলা সদরে একামাত্র নদটি পরিষ্কারের অভাবে এবং সংস্কারের অভাবে আর কোনো কাজে আসছে না। শুধু মশা-মাছি ও সর্প বিচরণ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নোংড়া আবর্জনার অভয়ারণ্যে পরিণত হয় নদটি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এ পরিচ্ছেন্ন অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সর্বমহল।
একুশে সংবাদ/ ফ.প্র/এ.জে