দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ব্যস্ততার মধ্যে কৃষকরা নতুন এক বিপদে পড়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের গাছে ব্যাপকভাবে ক্যারেন্ট (Brown Planthopper) ও ব্লাস্ট (Blast) পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পার্বতীপুরে ২২ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও ধান পাকার শুরুতেই নানা এলাকায় পোকার আক্রমণে ফসল বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা জুড়ে সরকারপাড়া, রামপুর, কৈপুলকি, হরিরামপুর, ডাংগাপাড়া, ডোলাপাড়া, মন্ডলপাড়া, বাসুপাড়া, পোদ্দারপাড়া, শিয়ালকোট, সাহাপাড়া, মধ্যপাড়া, আমবাড়ি, শালবাড়ি, মোস্তফাপুর, হামিদপুর, খয়েরপুকুরসহ অসংখ্য এলাকায় ক্যারেন্ট পোকার ব্যাপক উপদ্রব দেখা গেছে।
কৃষকরা জানান, নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ করেও পোকার আক্রমণ রোধ করা যাচ্ছে না। অনেক জমির ধান পাকতে শুরু করলেও ক্যারেন্ট পোকার আক্রমণে দানা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে জমি থেকে ধান ঘরে তোলার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
দক্ষিণ রামপুরার কৃষক আবেদ আলী, রঘুনাথপুরের শামসুল হক, চন্ডিপুরের আমজাদ হোসেন, মোস্তফাপুরের জাকিরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, কীটনাশক স্প্রে করার পরও কোনো লাভ হচ্ছে না। ধান পাকতে শুরু করলেও পোকার আক্রমণে ফলন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান বলেন, “আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্যারেন্ট পোকার আক্রমণ বেড়েছে। আগাম জাতের ধান চাষ করলে এমন সমস্যা অনেকটা এড়ানো সম্ভব। তারপরও কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”
কৃষকরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছ থেকে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/দি.প্র/এ.জে