বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, আজকে অনেকে সংস্কারের কথা বলে কিন্তু অতীতের দিকে তাকিয়ে দেখেন সংস্কারের দলই হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। সংস্কার দিয়েই যার যাত্রা শুরু। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র এই দেশে প্রথম যিনি দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য অর্থনীতির শৃঙ্খলা ও সংস্কার শুরু করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। জনগণের অধিকার আদায়ের এই ধারাবাহিকতায় বেগম খালেদা জিয়া প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি থেকে পার্লামেন্ট্রি ফর্ম অব গভর্নমেন্ট এটি অত্যন্ত বড় সংস্কার ছিল। সেটিও কিন্তু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কৃতিত্ব।
আজকে নারী শিক্ষায় অগ্রগতি বলেন, নারীদের ক্ষমতায়ন বলেন প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের। কাজেই সংস্কারে বিশ্বাস করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। আর জনগনের ভোটাধিকারের বিশ্বাস করে দেখেই সংসদে প্রস্তাব পাশ করে সংবিধানে ইন কর্পোরেট করা হয়েছিল যার কারণে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তীতে ৯৬ এ আরেকটি নির্বাচন হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা সংবিধানে সন্নিবেশিত করে। অর্থাৎ বিএনপি কোনো অবস্থাতেই নিজের দলের কথা স্বার্থের কথা চিন্তা করে নাই।
বিএনপি সব সময় চিন্তা করেছে, দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা, জনগনণর কথা। সংস্কারের কথা।
সেজন্যই মানুষের অধিকারে বিশ্বাস করা যে দল সেটি হচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। যে দল মানুষের পাশে থাকে। যে দল দেশের মানুষকে ফেলে পালিয়ে যায় না। যে দলের নেত্রী অনেক প্রলোভন অনেক সুযোগ সুবিধার প্রস্তাবনা আসার পরেও শত বাধাবিপত্তির মুখেও বাংলাদেশে থেকেছেন। নিজের অসুস্থতাকে গ্রহণ করেছেন। ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু কোন ধরণের আপস করেন নাই। সেই দল হচ্ছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।
বুধবার (১৪ মে) দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের বেঙ্গল কনভেনশন হলে আয়োজিত জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুর রিপনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জিকে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন মিলন, মিফতাহ সিদ্দিকী, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলহাজ মুজিবুর রহমান চৌধুরী (হাজি মুজিব) জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
ডা. জাহিদ আরও বলেন, সংস্কারের প্রস্তাব ৩১ দফা যেটি এটিও বিএনপির সংস্কারের ধারাবাহিকতার কর্মসূচির একটি অংশ। তাই যত দ্রততার সঙ্গে আগামীদিনে জনগণের অধিকার প্রয়োগে সুযোগ সৃষ্টি হবে, জনগণ তার অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ খুবই ক্ষণস্থায়ী র্দীঘস্থায়ী নয়। তাদেরকে বুঝতে হবে জনগণের অধিকার জনগণকে ফেরত দেয়ার জন্য অতিদ্রত নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করে জনগণকে তাদের অধিকার প্রয়োগের সুযোগ গ্রহণ করবে। জনগণ যাকে খুশি তাদের ইচ্ছামতো ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই আগামী দিনের সিদ্ধান্ত নেবে দেশ কোন দিকে এগোবে।
ডা. জাহিদ হোসেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর ইউনিটের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশ কিভাবে সুন্দর করা যায় সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। আগামীর বাংলাদেশ সুন্দর করার জন্য, সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটানোর জন্য এবং সুখী সমৃদ্ধশালী সার্বভৌম গড়ার জন্য এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে সুশাসন থাকবে। আইনের শাসন থাকবে। মানবাধিকার থাকবে। জনগণের অধিকার থাকবে। সকল ধর্মের মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে এবং সকল শ্রেণি পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ৩১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করে তারেক রহমানসহ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল শুধু নয়, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী অন্যান্য রাজনৈতিকদল ৩১ দফাকে জনগণের দফায় এবং জনগণের দাবিতে পরিণত করেছে।
মনে রাখতে হবে আমাদের দলের সবার মধ্যে কিভাবে ঐক্যকে ধারণ করা যায় এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এগোতে পারলেই ৫ আগস্ট ২০২৪-এ যেরকম স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে ঐক্যের কারণে একইভাবে ৩১ দফার পেছনেও জনগণের সমর্থন আদায় করা যাবে যদি আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের সামনে যেয়ে দাঁড়াতে পারি।
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে