চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া কাপ্তাই সড়কে গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীরা।
সরজমিনের গিয়ে দেখা যায়, ঈদের দিন থেকে অর্থাৎ আজ (রবিবার) ৬ম দিন প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে গণপরিবহনে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। ঈদের দিন থেকে ৬ম দিন পর্যন্ত সড়কে গণপরিবহনগুলোতে ঈদ আনন্দে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রচুর ভীড় দেখা গেছে। যাত্রীদের এই আনন্দ উপভোগের সুযোগে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকরা নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ৩-৪ গুণ বেশী ভাড়া আদায় করছে। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের সাথে বাকবিন্ডার ও অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ ঘটনাও ঘটেছে অসংখ্য। এমন একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ইতোমধ্য।
উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়ায় চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান হতে চট্টগ্রাম বদ্দারহাট পর্যন্ত দুটি বাস সার্ভিস চালু আছে, একটি এবি ট্রাভেল ও অন্যটি ওয়াইসিএল বা শাহ আমানত সার্ভিস। উক্ত দুটি বাস সার্ভিসে স্বাভাবিক বাড়ার চেয়ে দশ টাকা ভাড়া বাড়ালেও বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় ঈদে অতিরিক্ত যাত্রী বহনযোগ্য ছিল না। এতে করে সড়কে একমাত্র চলাচলের গণপরিবহন হিসেবে সিএনজি চালিত অটোরিক্সার উপর নির্ভর করতে হয় সাধারণ যাত্রীদের। এক প্রকার জিম্মি হয়ে বাধ্যগত কারণে তারা এসব গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য মেনে নিচ্ছেন। এই ভাড়া নৈরাজ্য ঠেকাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কাপ্তাই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, সিএনজি চালিত অটোরিক্সার ভাড়া নৈরাজ্য চরমে পৌঁছেছে। চন্দ্রঘোনা থেকে চট্টগ্রাম রাস্তার মাথা পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটারের স্বাভাবিক ভাড়া ৭০ টাকা। কিন্তু ঈদের দিন থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত এই ভাড়া আদায়ের অংক ছিল ১৫০-২০০ টাকা জন প্রতি। লিচুবাগান থেকে মরিয়ামনগর চৌমুহনী ৫ কিলোমিটারের স্বাভাবিক ভাড়া ১৫ টাকার জায়গায় নেয়া হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা। লিচুবাগান থেকে উপজেলা সদর ৯ কিলোমিটারের স্বাভাবিক ভাড়া ২৫ টাকা, কিন্তু নেয়া হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা। লিচুবাগান থেকে রোয়াজার হাট ৮ কিলোমিটারের স্বাভাবিক ভাড়া ২০ টাকার স্থলে চালকরা নিচ্ছেন ৫০-৭০ টাকা। লিচুবাগান থেকে নোয়াপাড়ার ২৫ কিলোমিটারের স্বাভাবিক ভাড়া ৫০ টাকার স্থলে নেয়া হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকা। ছোট ছোট শিশুদেরও কাছ থেকেও এই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
বাসের সিরিয়াল লম্বা হওয়ায় সময় স্বল্পতার কারণে লিচুবাগান থেকে চট্টগ্রাম সিটিতে যাওয়ার জন্য সড়কে অপেক্ষমান শিক্ষক আবদুল করিম জানান, আমরা প্রতিদিন বাস বা সিএনজি চালিত অটোরিক্সায় যাই ৭০-৮০ টাকায়। সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক ২০০ টাকা ছাড়া যাচ্ছে না। অনেকক্ষণ দেখলাম, বাধ্য হয়ে এখন অতিরিক্ত ১৩০ টাকা দিয়ে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এটা চরম অন্যায়। এভাবে আমাদের জিম্মি করার অধিকার কারও নেই।
সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালক আব্দুর রহিম জানান, আমরা ঈদের দিন সড়কে যাত্রীদের সেবা দিচ্ছি। সবাই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। আমরা তখন সড়কে যাত্রীদের নিজ গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছি। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঈদ উপলক্ষে একটু ভাড়া বেশী নিচ্ছি। আমরা সড়কে গাড়ি বাহির না করলে আপনাদের ঈদ আনন্দ নিরান্দে পরিণত হবে।
স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জেনেছি। স্বাভাবিক ভাড়া নেয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ