AB Bank
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বরিশালের  শিব ও পার্বতীর বিবাহের স্মারক উৎসবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নীল পুজা


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,বরিশাল
০৯:১২ পিএম, ৩ এপ্রিল, ২০২৪
বরিশালের  শিব ও পার্বতীর বিবাহের স্মারক উৎসবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নীল পুজা

সনাতন শাস্ত্রের পুরাণ অনুযায়ি গ্রামীণ ঐতিহ্যর ঐতিহাসিক লোকজ  সংস্কৃতির ধারক নীল পূজা বা নীল ষষ্ঠীর গানের উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে কালের বিবর্তণে বিলুপ্ত প্রায় নীল ষষ্ঠীর উৎসবের পরিধি দিন দিন ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। 

বরিশালের আগৈলঝাড়ার গ্রামীণ জনপদে দিনে ও রাতে হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মন্দিরের সামনে বা বাড়ির আঙ্গিনায় দেবাদীদেব মহাদেব, দেবী  পার্বতী, রাধা-কৃষ্ণ, আদি শক্তি দেবী কালীসহ অন্যান্য দেব-দেবীর অবয়ব (মূর্তি)  ধারণ করে অপরুপ সাজে সজ্জিত হয়ে শিল্পীরা ধর্মীয় অনুভুতির সাথে নেচে গেয়ে আনন্দ উচ্ছাস প্রকাশ করে বিনোদন দিয়ে আসছে। 

মুলত, সনাতন ধর্মের লোকজ সংস্কৃতিতে ভরপুর নৃত্য-গীত এর সংস্কৃতির সাথে পরিচিত শুধু একটি ধর্মের লোকজনই নয় বরং সকল ধর্মের লোকজনই। নীল পূজা বা  নীল ষষ্ঠীর গানের উৎসব ধর্মীয়ভাবে পালিত হলেও সকলেই উপভোগ করেন নীল পুজা ও গানের লোকোৎসব। 

নীল পূজা বা নীল ষষ্ঠী হলো সনাতন বঙ্গীয়দের এক লোকোৎসব। যা মূলত নীল-নীলাবতী  নামে (শিব-দুর্গা) এর বিবাহ উৎসব। বাঙ্গালী গৃহিণীরা নিজেদের সন্তানের মঙ্গল  কামনা এবং নীরোগ সুস্থ জীবন কামনায় নীলষষ্ঠী ব্রত পালন করে। পঞ্জিকা অনুযায়ি  চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক উৎসবের আগের দিন নীল পুজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এর আগে  পুরো চৈত্র মাস জুড়ে চলে সনাতন ধর্মের এই লোকোৎসব। যা মূলত নীল-নীলাবতী  নামে (শিব ও পার্বতী {দূর্গা}) বিবাহ-অনুষ্ঠানের স্মারক উৎসব। নীল উৎসবের পালা  গানকে বলা হয় অষ্টক গান।

শাস্ত্রীয় পুরাণ অনুসারে- নীল বা নীলকণ্ঠ দেবাদীদেব মহাদেব শিবের অপর নাম। সেই  নীল বা শিবের সাথে নীল চন্ডিকা বা নীলাবতী পরমেশ্বরীর (পার্বতী বা সতী) বিয়ে  উপলক্ষে লৌকিক আচার-অনুষ্ঠান সংগঠিত হয়। কাহিনী অনুসারে, রাজা দক্ষ’র যজ্ঞ 

অনুষ্ঠানে অপমানিত হয়ে দেবী পার্বতী দেহত্যাগের পর শিব জায়া সতী পুণরায়  নীলধ্বজ রাজার বিল্ববনেঅপরুপ সুন্দরী কন্যা রূপে আবির্ভূত হন। রাজা তাকে নিজ  কন্যা রূপে লালন-পালন করে শিবের সাথে বিয়ে দেন। বাসর ঘরে নীলাবতী শিবকে 

মোহিত করেন এবং পরে মক্ষিপারূপ ধরে ফুলের সঙ্গে জলে নিক্ষিপ্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন। 

রাজা-রাণীও সেই শোকে প্রাণ বিসর্জণ দেন। তাই নীল পুজা শিব ও নীলাবতীর বিবাহ-অনুষ্ঠানের স্মারক।

বাঙ্গালী গৃহিণীরা তাদের সন্তানের নীরোগ, সুস্থ জীবনের মঙ্গল কামনায় নীল ষষ্ঠী  ব্রত পালন করে। সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক উৎসবের আগের দিন নীল পূজা। অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। একটি চড়কে দু’টি বড়শি, তা নিজেদের পিঠে গেঁথে  চড়কে ঘুরে ধর্মীয়ভাবে আশির্বাদ নিয়ে এই পুজা সম্পন্ন করতে হয়। নীল সন্ন্যাসীরা ও শিব-দুর্গার সঙেরা পুজার সময়ে নীলকে সুসজ্জিত করে গীতি বাদ্য  সহযোগে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এবং ভিক্ষা গ্রহন করেন। নীলের গানকে বলা হয় অষ্টক  গান। পুজার দিন উপোষ থেকে সন্ধ্যায় রমণীরা সন্তানের কল্যাণার্থে প্রদীপ জ্বালিয়ে শিব পুজা করে সারাদিনের উপবাস ভঙ্গ করেন।

পঞ্জিকা অনুসারে ষষ্ঠী তিথি না থাকলেও এদিন পালন করা হয় নীল ষষ্ঠীর উৎসব। বাংলার বারো মাসের তেরো পার্বণের অন্যতম উৎসব নীল ষষ্ঠীর ব্রত। এই ব্রতর বিশেষত্ব হল এই ষষ্ঠী কোন দেবী নন, পূজিত হন স্বয়ং মহাদেব। নীল ষষ্ঠীর পরের দিন চৈত্র সংক্রান্তি। আর এর পরের দিন পহেলা বৈশাখ। গ্রাম বাংলার বিভিন্ন স্থানে চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পুজা করা হয়। চড়ক উপলক্ষে অনেক স্থানে বসে গাজনের মেলা। পুজা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয় গ্রামীণ মেলা।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!