জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই, পুনট ও জিন্দারপুর ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে পদও সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু মেডিকেল ডাক্তার নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তিনটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক পদটি শূন্য রয়েছে। দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপই নেননি। ফলে প্রতিদিন তিনটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা না পেয়ে ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। নামমাত্র চলছে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রম।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাত্রাই, পুনট ও জিন্দারপুর তিনটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেডিকেল অফিসারের পদ শুন্য থাকায় শুধু ফার্মাসিস্ট দিয়েই চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাত্রাই ও জিন্দারপুরে আজিম আলি ও জাহিদুল ইসলামকে স্যাকমো পদে পদায়ন করা হলেও তারা দুইজন প্রায় পাঁচ বছর যাবৎ উপজেলা সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে ও-ই দুই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
এদিকে, দুই ফার্মাসিস্টদের উপর পুরো অফিসের দায়িত্ব। আইনত ফার্মাসিস্টরা ব্যবস্থাপত্র লিখে দিতে পারেন না। তাই তারা রোগীর সমস্যার কথা শুনে মুখে ওষুধ খাওয়ার নিয়ম বলে দেন। প্রতিদিন গড়ে তাদের ২৫০/৩০০ জন রোগীকে সামাল দিতে হয়। অনেক বয়স্ক রোগী বাড়িতে গিয়ে ওষুধ খাওয়ার নিয়ম ভুলে গেলে আবার নিয়ম জানতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন। প্রসূতিসেবা নিতে আসা রোগীরা কাঙ্খিত সেবা না পেয়ে ফিরে যান। জটিল রোগীদের সদর হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এতে রোগীদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়। তাই মেডিকেল ডাক্তার বা স্যাকমো অফিসার থাকলে রোগীদের এতো দুর্ভোগ পোহাতে হতো না বলে জানান কর্মরত ফার্মাসিস্ট শামসুজ্জোহা ও হারুন রশীদ।
এ ব্যাপারে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আজিম আলি ও জাহিদুল ইসলাম বলেন,তাদের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পদায়ন হলেও ডেপুটেশনে ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশে তারা উপজেলা সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিষয়ে মাত্রাই ও জিন্দারপুর ইউনিয়নের আবেদা, আকলিমা, জেসমিন, আতিকুল, আব্দুল আহাদ জানান, গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষরা জটিল রোগ নিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে সেখানে ডাক্তার না পেয়ে ২০ কিমি দূরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসতে চরম বেগ পোহাতে হয় এবং অনেকেই মৃত্যুর কোলে পতিত হয়েছে বলে জানান। অনেকেই পরিবহন খরচ যোগাড় করতে না পেরে রোগ নিয়েই দিনাতিপাত করছেন।তাই যত দ্রুত সম্ভব মেডিকেল ডাক্তার বা স্যাকমো নিয়োগ দিয়ে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.ফয়সল নাহিদ বলেন,‘অনেক ডাক্তার প্রেষণে বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্ব পালন করছেন। এগুলো বাতিল করে সরকার যদি মেডিকেল ডাক্তার দেয় তাহলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালিয়ে উদ্বৃত্ত থাকলে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডাক্তার দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
একুশে সংবাদ/ড.ব.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :