লক্ষীপুর জেলার রায়পুরে পাওনা দুই লক্ষ টাকা চাওয়ায় মুন্নি আক্তার নামের এক গৃহবধুকে (২৭) রড-লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে প্রবাস ফেরত দেবর মো: রাসেল। এসময় গৃহবধুর হাতের তিনটি আঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলা হয়। আহত গৃহবধুকে তার স্বামী ও শ্বশুর উদ্ধার করে রায়পুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠান জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার সন্ধায় (১৯ নভেম্বর) উপজেলার চরমোহনা ইউনিয়নের আহাম্মদ পাটোয়ারী বাড়ীতে। এ ঘটনায় ওই অসহায় আহত গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদাউস মুন্নি বাদি হয়ে ২০ নভেম্বর (সোমবার) রায়পুর থানায় দেবর রাসেলসহ ৪ জনকে আসামি করে মামলার এজাহার দিয়েছেন।
রায়পুর উপজেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্তার নাহিদা আক্তার মিতু বলেন, আহত মুন্নি বাম হাতে তিনটি আঙ্গুল ভেঙ্গে ফেলা হয়। শরীরে মারাত্নক আঘাত। তাকে চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আহত গৃহবধু জান্নাতুল ফেরদাউস মুন্নি ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে চরমোহনা গ্রামের সফিক হাওলাদের ছেলের (স্থানীয় চিত্র শিল্পি) বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় মুন্নির। তাদের সংসারে বর্তমানে এক কন্যা শিশু রয়েছে। প্রায় ৫ বছর আগে কাতার যেতে রাসেল কে দুই লক্ষ টাকা ধার দেন মুন্নি ও তার স্বামী বিল্লাল। কিন্তু এত বছরের ওই টাকা না দেয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকে ও ঝগড়া হয়।
কয়েকদিন আগে রাসেল কাতার থেকে ছুটিতে গ্রামের বাড়ীতে আসেন। ১৯ নভেম্বর (রোববার) সকালে মুন্নি তার পাওনা দুই লক্ষ রাসেলের টাকা চাইতে গেলে উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে রাসেল রাতে মুন্নির ঘরে গিয়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এ সময় নগদ ৫০ হাজার টাকা, দামি মোবাইল ও স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় বলে মুন্নির দাবী। পরে মুন্নির চিৎকারে বৃদ্ধ শশুর এগিয়ে এসে মুন্নিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। এসময় রাসেলসহ তার লোকজন পালিয়ে যায়।
আহত মুন্নি বাদি হয়ে রাসেল হোসেন রাজু, জোসনা বেগম, আফরোজা আক্তার আয়শা ও মনির খাঁনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দেন।
এ ঘটনায় একাধিকবার অভিযুক্ত রাসেল এর বক্তব্য জানতে ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বৃদ্ধ বাবা সফিক হাওলাদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। রাসেলের কঠিন শাস্তি দাবি করেন।
চরমোহনা ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, ঘটনা শুনেছি। কয়েকবার তাদেরপারিবারিক শালিশ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু রাসেল তা মানছেনা এ কারণে বিরোধচলে আসছে। রায়পুর থানার ওসি ইয়াসিন ফারুখ মজুমদার জানান,দেবর রাসেলসহ চারজনের
বিরুদ্ধে আহত গৃহবধু মুন্নি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :