জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা সরকারি ৫০ শয্যা হাসপাতালের প্রায় কোটি টাকা মূল্যের পরিত্যক্ত দুটি এ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘদিন খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে। দায়িত্বে থাকা হাসপাতাল কর্মচারীরা চুরির কথা বলে সুযোগ বুঝে এ্যাম্বুলেন্স দুটির ইঞ্জিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় পরিত্যক্ত এ্যাম্বুলেন্সের একটি খোলা আকাশের নিচে এবং অপরটি খাঁচায় বন্দী থেকে জং লেগে কলকব্জাগুলো নষ্ট হয়েছে। ওই পরিত্যক্ত এ্যাম্বুলেন্স দুটি নিলামে বিক্রির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে তারা একেবারেই উদাসীন।
এদিকে সব যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এবং চুরি হওয়ায় এখন আর নিলামে তোলার অবস্থাতেও নেই বলে দাবি হাসপাতাল কতৃপক্ষের।

হাসপাতালে সূত্রে জানা গেছে, বিদেশি সংস্থার দেয়া এ্যাম্বুলেন্সটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর থেকে ২৮ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখায় বডিসহ ইঞ্জিনের সব যন্ত্রপাতি সুযোগ বুঝে হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা চুরি করে বিক্রি করে ফেলেছে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া আরেকটি এ্যাম্বুলেন্স অকেজো হওয়ার পর মেরামত না করে বিআরটিএ কতৃক পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
আরো জানা গেছে, ১২ বছর ধরে এই এ্যাম্বুলেন্সটিকেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পিছনে খোলা জায়গায় খাঁচায় বন্দী করে রেখেছেন। নির্জন স্থানে পড়ে থাকার সুযোগে ইঞ্জিনসহ ভেতরের সবকিছু চোরেরা খুলে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইর থেকে এটির চারটি চাকাসহ কিছু কিছু অংশ খসে যাওয়া দৃশ্যমান থাকলেও ভেতরের অবস্থা জানা সম্ভব হয়নি। তবে পরিত্যক্ত এ্যাম্বুলেন্স দুটির ইঞ্জিনসহ ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়ে জানা নেই বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স চালক মো. জেকের আলি বলেন, ‘তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে দু`টিই অকেজো। আমি ছাড়া অ্যাম্বুলেন্সের কোনো ড্রাইভারও নাই। একা রোগী আনা-নেয়া করতে খুবই অসুবিধা হয়।

হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করে জানান, কতৃপক্ষ গড়িমসি করেই এ্যাম্বুলেন্স দুটি নিলামে না দিয়ে ফেলে রেখে নষ্ট করছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ইঞ্জিনসহ যন্ত্রপাতিগুলো চুরি হয়ে যাচ্ছে। কতৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় মূল্যবান গাড়ি তিলে তিলে ক্ষয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ না করলে সরকারি সম্পত্তি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে, আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র। এতে রাষ্ট্র লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে বলে তারা দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণের অনুরোধ জানায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফয়সল নাহিদ বলেন, সরকারি এ্যাম্বুলেন্স নিলামে তোলার প্রক্রিয়াটি একটু জটিল ও সময়সাপেক্ষ। স্থানীয়ভাবে নিলামে দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। তবে শিগগিরই নিলামে বিক্রির অনুমতি চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলেই নিলামে তুলে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
একুশে সংবাদ/এসআর/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :