পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরের ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তরুণ উদ্ভাবক মো. আবু সুফিয়ান পারভেজ। মাত্র ২২ বছর বয়সে উদ্ভাবন করেন এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে পরিত্যক্ত পলিথিন গলিয়ে তৈরি করা যায় জ্বালানি তেল।
পারভেজের বাড়ি উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের মইদাম গ্রামে। তিনি পেশায় একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ২০১৯ সালে তিনি তৈরি করেন একটি পরীক্ষামূলক পাইরোলাইসিস রিফাইনারি প্ল্যান্ট। সেখানে টিনের ড্রাম, লোহার যন্ত্রাংশ, প্লাস্টিক পাইপ, বোতল ও বয়ামের সমন্বয়ে তৈরি মেশিনে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পলিথিন গলিয়ে রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করেন ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন এবং গ্যাস।
তিনি জানান, উৎপাদনের পর যে কার্বনজাত পদার্থ পাওয়া যায়, সেটি প্রক্রিয়াজাত করে ফটোকপির কালি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
পারভেজ বলেন, “ভালো মানের এক কেজি পলিথিন থেকে গড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ মিলিলিটার জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন এবং কিছু পরিমাণ গ্যাস।”
করোনা মহামারীর সময় প্রকল্পটির কার্যক্রম স্থগিত থাকলেও ২০২২ সালে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর তিনি আবারও কার্যক্রম শুরু করেন। একই বছরে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং পরে জেলা পর্যায়েও পুরস্কৃত হন।
তবে বর্তমানে আর্থিক সংকটের কারণে প্রকল্পটি পুনরায় স্থবির হয়ে পড়েছে। পারভেজ জানান, “আমি এখন গবেষণা চালাচ্ছি কীভাবে উৎপাদিত জ্বালানির মান আরও উন্নত করা যায়। সরকার যদি আর্থিক সহায়তা দেয়, তাহলে এই প্রকল্পকে বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এতে দেশের জ্বালানি সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যাবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা পারভেজের উদ্যোগকে যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যা দিয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন, যাতে করে এই উদ্ভাবনী প্রকল্পটি চালু রাখা যায় এবং জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :