শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে নির্মাণাধীন সম্প্রসারিত একটিঅটোরাইচ মিলের ডায়ার (অবকাঠামো) নিচ থেকে লিটন (৩০)নামে এক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের শ্রমিকের মাথা থেতলানো রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে উপজেলার বাঘবেড় ইউনিয়নের রানীগাঁও গ্রামের সেতু এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর নির্মাণাধীন সম্প্রসারিত অংশ থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত লিটন দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ পৌর সভার মাগরাই গ্রামের বাসিন্দা। নিহতের সঙ্গে থাকা শ্রমিক, মিল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, সেতু এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর অটো রাইচ মিলের পাশেই গত তিন মাস আগে আতব, মিনিকেট ও মোটা চাল তৈরির জন্য আরও পাঁচটি ডায়ার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। সম্প্রসারিত ওই ডায়ার স্থাপনের কাজ করছিলেন দিনাজপুরের আখি ইঞ্জিয়িার কন্সট্রাকসন এর একদল শ্রমিক। গত ১৮ আগস্ট শুক্রবার ডায়ার স্থাপনের প্রধান মিস্ত্রিসহ দুইজন ছুটিতে বাড়িতে যান। বর্তমানে নিহত লিটনসহ মোট ৫জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে প্রতিদিনের মতো কাজ সেড়ে সপ্তাহ শেষের মজুরী নিয়ে পাশেই চলে যায় শ্রমিকেরা। পরে রাতের খাবার খেয়ে ৪শ্রমিক ভাড়ায় নেওয়া ঘরে ফিরে গেলেও রয়ে যায় রাকিব ও লিটন নামে দুই শ্রমিক। রাত সাড়ে দশটার দিকে রাকিব ঘরে ফিরলেও কাজের কথা বলে মিল এলাকায় রয়ে যায় লিটন। ভোর পর্যন্ত না ফেরায় সহকর্মীরা লিটনকে খোঁজতে থাকে। একপর্যায়ে নির্মাণাধীন একটি ডায়ারের নিচে মাথার পেছনের অংশ থেতলানো অবস্থায় লিটনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে শ্রমিক গোপাল। পরে মিলের গার্ডকে বলা হলে মিল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
মিল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে সহকারী পুলিশ সুপার নালিতাবাড়ী সার্কেল রায়হানা ইয়াসমিন ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হকসহ সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে ওই মরদেহ উদ্ধার করে ময়য়নাতদন্তের জন্য শেরপুর মর্গে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানা নেওয়া হয় সঙ্গে থাকা অপর ৫ শ্রমিককে।
শ্রমিক তারিফুল (৩৫) ও রাকিব (২৮) জানায়, বৃহস্পতিবার কাজ শেষে মিল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিটন ৪ হাজার টাকা নেয়। তার কাছে আরও ৪-৫ হাজার টাকা ছিল। ওই ৮-৯ হাজার টাকায় স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে পুরাতন স্মার্টফোন কেনার কথা ছিল লিটনের। আমরা সবাই খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘরে ফিরে গেলেও লিটন কাজের কথা বলে বাইরে রয়ে যায়। সারা রাত না ফেরায় ভোরে আমরা খোঁজতে বেরুই।
সেতু এগ্রো ইন্ড্রাস্ট্রিজ এর সত্বাধিকারী হুমায়ুন কবির হিমেল বলেন, আমার মিলের নতুন আরও ৫টি ডায়ার করার জন্যদিনাজপুরের আখি ইঞ্জিয়িার কন্সট্রাকসনকে কাজ দেই। তাদের ৬ জন শ্রমিক কাজ করছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধা পর্যন্ত ৬জন শ্রমিক কাজ করে থাকার রুমে চলে যায়। রাতে থেকে একজন শ্রমিক থাকার রুমে যায় নাই অন্য শ্রমিকরা আমাদের বা কন্সট্রাকসন এর লোকদের জানায়নি। পরে সকালে শ্রমিকরা লাশ দেখতে পেলে পুলিশকে
বিষয়টি জানানো হয়।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান, ঘটনা তদন্তে সিআইডি’র ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে রয়েছে। তদন্ত শেষ
হলে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :