AB Bank
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

আলুর দাম কমায় কৃষকরা অসন্তোষ


আলুর দাম কমায় কৃষকরা অসন্তোষ

জয়পুরহাটের কালাইয়ে আলুর ভালো ফলন হলেও দরপতনে আলু চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কালাই উপজেলা খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। উদয়পুর ইউনিয়ন, মাত্রাই ইউনিয়ন, পুনট, জিন্দারপুর ও আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন এছাড়াও উপজেলার প্রায় এলাকায় আলুর চাষ হয়ে থাকে। কালাইয়ে আলুর মণ ৪০০-৪৫০ টাকা। এবার আলুর ফলন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় কৃষক লোকসানে রয়েছে। কৃষক দাম না পেলেও খুচরা বাজারে দাম ঠিকই আছে। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। অনেক কৃষক আলুর চাষাবাদের খরচ তুলতে না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন।

 

বর্তমানে হাট বাজারে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত আলু বিক্রি করছেন। উপজেলার হাট বাজার ও নির্দিষ্ট পয়েন্ট থেকে প্রচুর পরিমাণে আলুর আমদানি হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা আলু কিনতে আসে। কিন্তু মাস খানেক  থেকে হাটে আলুর বাজারে আলুর দাম নিম্নমুখী হতে থাকে। প্রকার ভেদে আলুর দাম  ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে পাইকাররা ক্রয় করে।হটাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় হাটে আলু নিয়ে আসা কৃষকরা বেকায়দায় পড়েন। হাট ইজারাদারের লোকজন জানান, হাটে অনেক পাইকার না আসায় এবং আলুর আমদানি বেশি হওয়ায় হাতে গোনা কয়েক পাইকার আলুর দাম কমিয়েছে।

 

আলুর দাম নিয়ে চাষীরা জানান, আলুর বাম্পার ফলন হওয়া স্বত্বেও দাম কমে যাওয়াতে বিপাকে পড়েছেন তারা। যেমন ফলন হয়েছে তেমন যদি বাজারে দাম পাওয়া যেতো তাহলে কৃষকরা লাভবান হতো। আলু রোপণের সময় বীজ ক্রয় করা হয়েছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

আর সেই আলু বাজারে এখন ১২ টাকা থেকে ১৫ টাকা কেজি, যার ১ মন আলু ৪২০ টাকা থেকে ৪৪০ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে কৃষকদের লাভের আশা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।

 

আলু চাষীরা জানান, তারা কয়েক বছর ধরেই ভালো ফলন পেলেও কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছেন না। কম দামের কারণে এবারও তাদের মুখে হাসি নেই। জমি লিজ নেওয়া থেকে শুরু করে বীজ, চাষ, সার, সেচসহ প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে গড়ে ২৮-৩০ হাজার টাকা।আর এসব আলু চাষী নিজস্ব জমিতে আলু চাষ করেছেন তাদের ২২-২৪ হাজার টাকা খরচ পরেছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কালাই কাজিপাড়া,মূলগ্রাম,বুড়াই,উলিপুর,দুর্গাপুর, বিনইল,শিমরাল, হাতিয়র,মাত্রাই,বিয়ালা এলাকায় আলু চাষিরা জমি থেকে শেষের দিকে আলু উত্তোলন করেছেন। তারা এক সঙ্গে লাইন ধরে বসে ক্ষেত থেকে আলু তুলে একটি পরিষ্কার স্থানে রেখে বস্তাবন্দি করছেন। কিছু আলু পঁচা থাকায় সেগুলো ভিন্ন পাত্রে সংগ্রহ করে রাখছেন। ফলন কম-বেশি পেলেও কম দামের কারণে চাষিদের মুখে হাসি নেই।

 

আলু চাষী ফারায়েজ হোসেন জানান,তিনি এক কানি জমিতে আলু চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। এ বছর আলু চাষ করতে যা ব্যয় হয়েছে আলু বিক্রি করে তা পাওয়া যাবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় আছেন।

বলিগ্রাম এলাকার কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, আমি এ বছরই প্রথম লাভের আসায় আলু চাষ করেছিলাম। ফলন ভালোই হয়েছে, কিন্তু যেই দাম উঠেছে সেই দামে আলু বিক্রি করলে চালানের টাকা তোলাই কষ্টকর হয়ে ওঠবে।

 

হাতিয়র গ্রামের ইসমাইল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন জানান,এ বছরও আলুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে কয়েকদিন আগের আলুর দামের তুলনায় এখন আলুর দাম কমে গেছে। তবে আলুর দাম সারা দেশে একই অবস্থা। আলুর দাম কম পাওয়ায় কৃষক আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। তাই তারা জমিতে আলুর আবাদ ধীরে ধীরে কমিয়ে অন্য লাভজনক ফলনশীল ফসল আবাদ করতে পারে বলে,মনে করা হচ্ছে।

 

কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র দাস জানান, এ মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ১২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। প্রতিবছরের চেয়ে এ বছর আলুর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। তবে বাজারে এখন আলুর দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা কিছুটা হতাশ। এ বছর মণপ্রতি আলুর দাম কমেছে প্রায় ২০০ টাকা। অর্থাৎ এ বছর প্রতি মণ আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪০০-৪৫০ টাকায়। অথচ গত বছরের তুলনায় আলুর দাম এখন কম হলেও ভালোই আছে।

 

উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আলু বাড়িতে মজুদ রাখার জন্য আলু চাষিদেরকে নানা পদ্ধতি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

আলুর দাম বাজারে কম কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আলুর রফতানি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি আলুর বহুমাত্রিক ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমি মনে করি প্রতি বছর চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উৎপাদন করলে বাজারে আলুর দাম বাড়বে। কেননা চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি হলে বাজারে দাম কমবে—এটাই স্বাভাবিক।’

 

‘উপজেলায় সর্বমোট হিমাগার রয়েছে ১২টি। উপজেলায় প্রায় সাড়ে বার লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়। এর মধ্যে এক লাখ ১২ হাজার ১০ মেট্রিক টন আলুর ধারণ ক্ষমতা হিমাগারগুলোতে আছে। হিমাগারে থাকা আলুর মধ্যে মাত্র ৩৫ শতাংশ খাওয়ার জন্য এবং বাকিগুলো বীজ হিসাবে ব্যবহার হয়।’

 

একুশে সংবাদ.কম/এ.আ.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!