AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঈগল এক্সপ্রেস বাসে যা হয়েছিল, বর্ণনা দিলেন ধর্ষণের শিকার নারী


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,টাঙ্গাইল
০৯:৪৪ পিএম, ৪ আগস্ট, ২০২২
ঈগল এক্সপ্রেস বাসে যা হয়েছিল, বর্ণনা দিলেন ধর্ষণের শিকার নারী

 

বুধবার (৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ছাড়ে ঈগল এক্সপ্রেসের বাসটি । গন্তব্য নারায়ণগঞ্জ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছে সিরাজগঞ্জের জনতা হোটেলে। মহাসড়কের পাশের এই হোটেলে যাত্রীরা খাওয়া-দাওয়া করেন। যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১২টার দিকে গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় বাসটি। এরপরই সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যেই তিন ধাপে ১৩ জন বাসটিতে ওঠে। তখনও বাসে থাকা যাত্রীরা আঁচ পারেননি আগামী কয়েক ঘণ্টায় কী ঘটতে যাচ্ছে।

 

এরপরই শুরু হয় তিন ধাপে বাসে ওঠা ১৩ ডাকাতের তাণ্ডব। প্রথমে চালকের গলায় চুরি ঠেকিয়ে বেঁধে ফেলে চালক, হেলপার ও সুপাইভাইজারকে। এরপর যাত্রীদের বেঁধে বাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লুট করে মালামাল। লুটপাট শেষে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। বাসটিতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা তাণ্ডব চালিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় একটি বালুর স্তূপে বাসটি উল্টে দিয়ে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ধর্ষণের শিকার ওই যাত্রী বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এসব তথ্য জানান।

আরও পড়ুন- চলন্ত বাসে ডাকাতির পর তরুনীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ

তার ভাষায়, ‘রাত সাড়ে ১১টায় বাস সিরাজগঞ্জের হোটেলে পৌঁছে। সেখানে খাওয়া-দাওয়া শেষে বাস চালুর পাঁচ মিনিটের মধ্যে এক জায়গা থেকে তিন জন লোক ওঠে। তাদের বয়স ২০-২২-এর মধ্যে। তারা উঠে বলে, সামনে আমাদের আরও লোক আছে। একটু দূর যাওয়ার পর আরও চার জন বাসে ওঠে। সেখান থেকেও একজন বলে, আমার লোক আছে সামনে। এই বলে ওরা সিরাজগঞ্জের মধ্যেই আরও ছয় জন ওঠে। তাদের পেছনের সিটে বসানো হয়। আমি স্টাফের ওয়াইফ, এ জন্য আমার দুটো সিট। কোনও মহিলা হলে বসতে দেওয়া যেতো। আমার সিটে ওরা একজন বসলেও তাকে উঠিয়ে দেওয়া হয়।’

 

তিনি বলেন, ‘এরপর ড্রাইভারের কাছে গিয়ে তিন জন বলে সামনে নামবো। এই কথা বলেই তারা ড্রাইভারের পাশে বসে। কিছুক্ষণ পর ড্রাইভারের গলায় চাকু বসায়। এরপর ড্রাইভার হেলপারকে নিয়ে পেছনে চলে আসে। এরপর ড্রাইভার, হেলপার, সুপারভাইজারসহ বাসে থাকা সব পুরুষের মুখ, চোখ ও হাত-পা বেঁধে ফেলে। বাসে থাকা ছয় মহিলাকেও একইভাবে বাঁধা হয়। এরপর টাকা, মোবাইল ফোন ও সোনা সবই কেড়ে নেয়। আমার হাত, মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। এক হিন্দু দিদিও আক্রান্ত (সম্ভাব্য ধর্ষণের শিকার) হয়েছেন। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু তার স্বামী তাকে নিয়ে চলে যায়। উনি থাকলে সবকিছু শোনা যেত। বাসে অনেককেই মারধর করা হয়েছে। আমারও গলা টিপে ধরে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।’

 

জানা গেছে, বাসটি আড়াই ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের নাটিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন সড়কে ঘুরিয়েছে ডাকাতরা। পরে মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় বালুর স্তূপে বাসটি উল্টে দিয়ে পালায় তারা। ওই সময় চালক-হেলপারও পালিয়ে যায়।

 

তখন যাত্রীদের উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় রাজা মিয়া নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের দাবি, সে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মূলহোতা।

 

মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, ‘বাসটিতে ২৪-২৫ জন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে ছয়-সাত জন নারী ছিলেন। বাসের সবাইকে জিম্মি করে সবকিছু লুট করেছে ডাকাতরা। ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় ওই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় এক যাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

 

একুশে সংবাদ.কম/জা.হা

Link copied!