AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে গাজীপুরে আমলকী ও লটকনের চাষ


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৫:০০ পিএম, ২৯ আগস্ট, ২০২১
বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে গাজীপুরে আমলকী ও লটকনের চাষ

গাজীপুর জেলার বিভিন্ন  উপজেলা থেকে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি টাকার লটকন ও আমলকী বিক্রি হচ্ছে দেশর বিভিন্ন জেলাসহ-বিদেশের বাজারে। প্রায় ১ হাজার ২০০ টন আমলকী উৎপাদন হয় জেলার দুই উপজেলার কয়েকটি গ্রামে। প্রাই এর সমপরিমান লটকনও উৎপাদিত হচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি উইনয়নের বিধাই গ্রামের আফাজ উদ্দিন মাস্টারে মিশ্র ফল বাগানসহ উপজেলার অনেক ইনিয়নে।

 লটকন ও আমলকী চাষের জন্য এলাকাগুলো পরিচিত হলেও কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে আমলকী,লটকন,আমরা,জামরুলসহ বিভিন্ন প্রকারের ফল চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকরা। বাজারের ব্যাপক চাহিদা, স্বল্প পরিশ্রম, অধিক ফলন এবং সহজেই বাজারজাতের সুবিধা থাকায় অন্যান্য ফল ও সবজির পরিবর্তে এখন ব্যাপকভাবে বিভিন্ন প্রকারের ফল চাষ করছেন তারা।

তবে সম্প্রতি বিদেশ থেকে হাইব্রিড জাতের ফল আমদানির কারণে দেশীয় এ কৃষিপণ্যের সম্ভাবনাময় বাজারটিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন কৃষক, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি দেশেয় যেহেতু অনেক ধরনের ফল চাষ হচ্ছে। তারা বিদেশ থেকে বিভিন্ন হাই ব্রীট ফল আনা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

তেলিহাটি উইনয়নের বিধাই গ্রামের মিশ্র ফল বাগান মালিক আফাজ উদ্দিন মাস্টারে সঙ্গে ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বারোতোপা গ্রামে,তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে ও কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ৪০ বছর ধরে ফল চাষ হয়ে আসছে। প্রথম অবস্থায় শখের বসে বাড়ির আশপাশে দু-একটি গাছ লাগানো হলেও ক্রমেই এর চাষ বাড়তে থাকে। দেশীয় জাতের আমলকীর ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে ১০-১২ বছর থেকে কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বাগান গড়ে উঠেছে।

বর্তমানে কাপাসিয়া উপজেলার তিলশুনিয়া, ডেফুলিয়া, ধরপাড়া, কোট বাজালিয়া, চাঁদপুর, জালিশা, হরিদাশপুর, বড়ছিট, ভাকোয়াদী, দুবুরিয়া, কামড়ামাশুক, পাপলা চামুরখী গ্রামে এবং কালীগঞ্জ উপজেলার নোয়াপাড়া, জাঙ্গালিয়া, নড়ুন, দেওতলা গ্রামে ও তেলিহাটি উইনয়নের বিধাই গ্রামের আফাজ উদ্দিন মাস্টারে মিশ্র ফল বাগানে বাণিজ্যিকভাবে আমলকী,লটকনসহ বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ হচ্ছে।

সরেজমিনে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, অন্যান্য কৃষিপণ্যের চেয়ে আমলকী অনেক উচ্চমূল্যে বিক্রি করা যায়। পুরনো কৃষকদের পাশাপাশি অনেক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাও এগিয়ে আসছেন আমলকী চাষে। বর্তমানে দুই হাজারের মতো চাষী বাণিজ্যিকভাবে আমলকী চাষের সঙ্গে জড়িত। তাদের কাছ থেকে প্রতি বছর সর্বনিম্ন ৩০ হাজার মণ (স্থানীয় চাষীদের হিসেবে) আমলকী দেশে ও বিদেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে সর্বনিম্ন ৫০ টাকা কেজি এবং মৌসুম ছাড়া সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা যায়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব আমলকী কিনে ঢাকার বিভিন্ন আড়ত (শ্যামজাবার, যাত্রাবাড়ী ও কাওরানবাজার), গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস ও কোনাবাড়ী আড়তসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, ওষুধ কোম্পানি, রফতানিকারকদের কাছে বিক্রি করেন।

কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আমলকীচাষী মোহাম্মদ আলী জানান, তার বাগানে ১০০-এর মতো গাছ রয়েছে। এর মধ্যে পুরনো ৪০টা গাছে ফলন আসে। এ বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার আমলকী বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, আমলকী চাষের আগে তার জমিতে বাঁশবাগান ছিল, তাতে তেমন কোনো আয় হতো না। আমলকী চাষ করে তিনি এখন বেশ ভালো আয় করছেন। তিনি আরো জানান, কলমের চারা লাগানোর এক বছরের মধ্যেই গাছে আমলকী ধরা শুরু করে এবং পরবর্তী বছর থেকে প্রচুর ফলন আসে। গাছ লাগানোর সময় গোবর ও টিএসপি সার এবং শুকনা মৌসুমে সামান্য পানি দিতে হয়। এছাড়া তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না।


তেলিহাটি ইউনিয়নের টেংরা গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মোক্তার হোসেন জানান, অন্য কৃষকদের দেখাদেখি তিনি গত বছর জমিতে লটকন,আমরা, আমলকীর চারা লাগিয়েছেন। এ বছরই ফল ধরা শুরু করেছে। তিনি জানান, লটকন ও আমলকীর বাজারদর অনেক ভালো।

স্থানীয় ব্যবসায়ী আওলাদ হোসেন মোল্লা জানান, তিনি প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আমলকী সরবরাহ করেন। তার নিজের বাগান ও কৃষকদের বাগান বছর মেয়াদি কিনে ২৬ বছর ধরে এ ব্যবসা করছেন। তিনি প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কেজি আমলকী বিক্রি করেন। প্রতিদিন তিন ট্রাক আমলকী ঢাকার আড়তগুলোতে যায়। শুধু গাজীপুরেই বিক্রি হয় ৪০০ কেজি। তিনি জানান, ঢাকার কয়েকজন রফতানিকারক রয়েছেন, যারা তার কাছ থেকে আমলকী নিয়ে লন্ডন, কানাডা, সৌদি আরব, দুবাই ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রফতানি করেন। গত বছর করোনা মহামারীর সময় তিনি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরেও আমলকী বিক্রি করেছেন।


কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন কুমার বসাক জানান, এ এলাকার মাটি ও পরিবেশ আমলকী চাষের জন্য বেশ উপযোগী। উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমিতে আমলকীর চাষ হচ্ছে, যেখান থেকে এ বছর ১০৮ টন আমলকী উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত আমলকীর অর্ধেকেরও বেশি দেশের বাইরে রফতানি হয়। তিনি জানান, আমরা কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান ও সহযোগিতা করছি।

Link copied!