বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংর্ঘষে এক গ্রুপের শিক্ষার্থী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার ও আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে৷
জানা যায়, ঐ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আয়াত উল্লাহ৷ তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের রক্তিম -বাকি গ্রুপের অনুসারী৷ শনিবার ছাত্রলীগের দু` গ্রুপের সংঘর্ষে ঐ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী (আয়াতউল্লাহ) পায়ের রগ কাটার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বুধবার (৯ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে করে কঠোর নিরাপত্তায় এ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দিতে দেখা যায় তাকে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর দুটি অভিযোগপত্র দায়ের করেন তিনি৷
সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার ছাত্রলীগের দু`পক্ষের সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মোট ১২ জন আহত হয়। এদের একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন প্রতিমন্ত্রী কর্নেল জাহিদ ফারুখ (শামীম) এর অনুসারী রক্তিম -বাকি গ্রুপ আর অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছে শান্ত-রুমি-তমাল। এরা নিজেদেরকে সাবেক মেয়র সাদেক আবদুল্লাহর অনুসারী বলে পরিচিত। ঐ ঘটনায় উপাচার্য ড. ছাদেকুল আরেফিনের নির্দেশে রোববার (৬ আগস্ট) ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আহত মো আয়াত উল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে, বলেন, হামলার দিন শনিবার আনুমানিক রাত ১১ টা ১০ মিনিটে মোবাইলের মাধ্যমে আমি জানতে পারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে হেলমেট পরিহিত ৩৫-৪০ জন সন্ত্রাসী রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, কিরিচ নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমাদের সহপাঠীদের কুপিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ফেলে রাখা হয়েছে। তখন আনুমানিক রাত ১১ টা ২৫ মিনিটে আমরা তাদের উদ্ধার করতে হলের দিকে যাত্রা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এর সামনে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় তারা আমাকে রামদা দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে।
এসময় আমি তাদের মধ্য ৪ জনকে চিনতে পারি তারা হলো- ১। তানজিদ মঞ্জু (ইংরেজি বিভাগ- ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), ২। মো: রায়হান ইসলাম (গণিত বিভাগ- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), ৩। মোবাশ্বির রিদম (গণিত বিভাগ- ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ) ৪। শরীফুল ইসলাম ( একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগ- ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।
এছাড়াও তিনি বলেন, রামদার আঘাতে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও সন্ত্রাসীরা ক্ষান্ত হয়নি, তারা আমার মৃত্যু নিশ্চিত করতে আমার বাম পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে আমাকে সহপাঠিরা নিথর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করে, হামলার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা চিকিৎসার ব্যবস্থার জন্য কোনো প্রয়োজন অনুভব করেনি। এমনকি তারা অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত পাঠাতে পারেনি। ঘটনা পরবর্তী সময়ে তারা সন্ত্রাসীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো অবৈধভাবে দখল করতে দিয়েছে। ইতোপূর্বে এই সন্ত্রাসীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুমে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ নানান ধরণের সহিংসতার সাথে জড়িত। এদের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। পুলিশ থেকে এদের আগলে রেখেছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আজীবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে বসার কথা জানান তিনি৷
একুশে সংবাদ/প.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :