AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঘুরে এলাম ইলিশের বাড়ি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৩:০০ পিএম, ৩ অক্টোবর, ২০২০
ঘুরে এলাম ইলিশের বাড়ি

লঞ্চে চড়ে ইলিশের বাড়ি যাওয়ার স্মৃতি কখনোই ভোলা যায় না। যতক্ষণ থাকবেন; ততক্ষণই মুগ্ধ হবেন। তাই যখন-তখনই হাজির হতে পারেন। সম্প্রতি ইলিশের বাড়ি থেকে ঘুরে আসার অভিজ্ঞতা ও ভালো লাগার কথা জানাচ্ছেন আবু রায়হান মিকাঈল-

চাঁদপুর, ইলিশের বাড়ি খ্যাত একটি জেলা। হঠাৎ সিদ্ধান্তে চাঁদপুর ভ্রমণ। সঙ্গে ছিলেন নগরপরিকল্পনাবিদ এসএম সাইফ রহমান ও তার ছেলে। সকাল ৮টায় গিয়ে পৌঁছলাম রাজধানীর সদরঘাটে। দ্রুত টিকিট কেটে উঠে পড়লাম চাঁদপুরগামী লঞ্চে।

সকালের নাস্তা লঞ্চেই করেছিলাম। লঞ্চের ক্যান্টিনে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার, চা, কফিসহ অনেক কিছুই পাওয়া যায়।

নতুনদের জন্য লঞ্চ ভাড়ার বিষয় একটু বলে রাখি। লঞ্চের টিকিট ডেক ১০০ টাকা, সেকেন্ড ক্লাস চেয়ার ১৫০ টাকা, ফার্স্ট ক্লাস এসি চেয়ার ২০০-২২০ টাকা, বিজনেস ক্লাস এসি চেয়ার ২৭০ টাকা, সিঙ্গেল নন এসি কেবিন ৪০০-৪৫০ টাকা আর এসি সিঙ্গেল কেবিন ৫০০ টাকা। যদি নদী ও এর তীরবর্তী সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে ডেকে টিকিট কাটাই ভালো। তবে যে টিকিটই কাটেন না কেন, পুরো লঞ্চটি ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা থেকে চাঁদপুর যেতে সাড়ে ৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগে। তবে পুরো সময় চোখের পলকে কেটে যাবে। যদি আপনি নদীর প্রেমে পড়ে যান। নদীর প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে কখন যে পৌঁছে যাবেন, বুঝতেই পারবেন না!

আমাদের লঞ্চ ছাড়লো ১৫ মিনিট দেরিতে। দূষিত বুড়িগঙ্গা পার হয়ে ধলেশ্বরী থেকে যখন মেঘনা নদীতে পৌঁছলাম, তখন মনে হলো কোন এক সমুদ্রের বুকে আছি। যেদিকে তাকাই শুধু অথৈ জল। লঞ্চের ছাদ থেকে নদীর সৌন্দর্য বেশি উপভোগ করা যায়। তাই চলে গেলাম লঞ্চের ছাদে। হিমেল হাওয়ার পরশে সেদিন রোদ্টাও বন্ধু হয়ে গেল। রৌদ্রের ছটা নদীর জলে পরে বাড়িয়েছে ভালোবাসার গভীরতা!

ইলিশ বিক্রেতাদের হাঁকডাক আর ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ লেখা বিশাল সাইনবোর্ড দেখে বুঝে গেলাম পৌঁছে গেছি আমাদের গন্তব্যে। চাঁদপুর পৌঁছে লঞ্চ থেকে নেমে প্রথমে চলে গেলাম কালীবাড়ী মোড়ে। সেখানে রয়েছে চাঁদপুরের বিখ্যাত ‘ওয়ান মিনিট’ আইসক্রিম ও মিষ্টির দোকান। সেখানকার আইসক্রিমের স্বাদ মনে রাখার মতো।

ওয়ান মিনিট আইসক্রিমের স্বাদ নিয়ে চলে গেলাম মোহনায়। যে মোহনায় একসাথে মিশেছে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া। ৩ নদীর মিশ্রিত স্রোত দেখে মনে একটু ভয়ের সঞ্চার হলেও ভালো লাগার কমতি ছিল না। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ছুটে আসে মোহনার টানে। পড়ন্ত বিকেলে মোহনার পাড় সদ্য ফোটা গোলাপের মতো রোমাঞ্চ ছড়ায়। এদিকে মোহনার বুকে জেগে ওঠা দ্বীপটি এখন হয়ে গেছে প্রকৃতিপ্রেমীদের চারণভূমি। তাই ট্রলারে চড়ে দলে দলে যাচ্ছে সবাই দ্বীপান্বিতার পানে।

মোহনায় মুগ্ধ হয়ে চলে গেলাম চাঁদপুর মাছঘাটে। দূরত্ব খুব বেশি নয়, তাই মোহনা থেকে পায়ে হেঁটেই গেলাম। এ ঘাটেই কেনাবেচা হয় ইলিশ। পাইকারি-খুচরা সব রকমই বিক্রি হয়। জেলেদের সদ্য ধরে আনা একদম তরতাজা ইলিশের সমাহার সেখানে। সেখান থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ইলিশ সরবরাহ হয়ে থাকে।

মাছঘাটে ইলিশের সরগরম থাকে বেশ সকালে ও শেষ বিকেলে। এ দুই সময়ের বাইরে গেলে বাজারটা একটু নিরামিষ মনে হতে পারে।

মাছঘাটের আশপাশে রয়েছে কিছু হোটেল। এখানে আছে দারুণ সুবিধা। বাজার থেকে পছন্দমতো ইলিশ মাছ কিনে পাশের কোন হোটেলে দিতে পারেন। তারা আপনার সামনেই কেটে-বেছে মাছটা ভেজে দেবে। এজন্য সামান্য কিছু চার্জ নেবে। তাছাড়া সেখানকার প্রত্যেক হোটেলেও ইলিশ পাবেন। হোটেলভেদে প্রতি পিস ইলিশ ৮০-১২০ টাকা দাম নেবে। ভাত, ইলিশ ভাজি আর সঙ্গে খেতে পারেন ইলিশের লেজের ভর্তা। স্বাদে-গন্ধে যোগ হবে নতুন মাত্রা।
সেদিন আমাদের কাছে তাজা ইলিশের স্বাদটা ছিল সত্যি অন্যরকম। তাই ইলিশ ভোজনে পূর্ণতা পেয়েছিল ইলিশের বাড়ি ভ্রমণের শূন্যতা।

এবার ঢাকায় ফেরার পালা। সন্ধ্যায় এলাম চাঁদপুর লঞ্চঘাটে। ঢাকাগামী লঞ্চে উঠলাম। কিছুক্ষণ পর একটু জোরেসোরে হর্ণ বাজিয়ে লঞ্চ ছেড়ে দিল। লঞ্চের ছাদ থেকে সন্ধ্যাতারার আকাশ অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। মৃদু হাওয়া সঙ্গ দিয়ে যখন একটু রাত নামলো; তখন এক পৃথিবী ভালোবাসা যেন আমার হাতের মুঠোয় চলে এলো। বিশাল মেঘনার বুকে দুর্বার গতির লঞ্চের ছাদে দাঁড়িয়ে যেন জীবনের সেরা একটি মুহূর্ত অবলোকন করলাম।

একুশে সংবাদ/এআরএম

Link copied!