AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ০৭ জুলাই, ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

যাত্রাবাড়ী সড়ক সংস্কারে ধীরগতি, জনদুর্ভোগ চরমে


Ekushey Sangbad
মুহাম্মদ আসাদ
১২:২২ পিএম, ২০ আগস্ট, ২০২৩

যাত্রাবাড়ী সড়ক সংস্কারে ধীরগতি, জনদুর্ভোগ চরমে

গুলিস্তান ফ্লাইওভারের নিচে যাত্রাবাড়ীসড়কটিতে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে বেহাল অবস্থা। ঢাকা-কাঁচপুর আট লেনের মহাসড়কটি রাজধানীর প্রবেশ মুখ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কটির কার্পেটিং, পিচ, পাথর, সুরকি উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না করার কারণে সড়ক এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। তবে গত রোজার ঈদের পরে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও কাজের ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে বলে স্থানীয়রা জানান।

 

এ ছাড়া রাস্তার পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও ময়লা-আবর্জনা ফেলে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। সংস্কারের পর রক্ষণাবেক্ষণ না করার কারণে এ সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ জন্য পরোক্ষভাবে ফ্লাইওভার কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

 

তাদের অভিযোগ, ফ্লাইওভার দিয়ে যাতে বেশি গাড়ি চলাচল করে, সে জন্য নিচের সড়ক ঠিক করছে না সিটি করপোরেশন। এ জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ বেহাল অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে সড়কটি। প্রতিদিন সড়কের অর্ধেক দখল করে মাছ ও কাঁচা বাজারের দোকান বসানো হয়। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী আড়তের সামনের অংশ পুরোটাই পিকআপ ও পণ্যবাহী ট্রাকের অবৈধ পার্কিংয়ে দখল থাকে। তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে বলে স্থানীয়রা জানান।

 

রোবাবার সরেজমিনে কুতুবখালি সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, যাত্রাবাড়ী থানার সামনে থেকে কুতুবখালির মোড় পর্যন্ত সড়কের এই পাশে বড় বড় গর্ত। অপর পাশে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারের প্রথম টোলপ্লাজার বাম পাশের রাস্তাটি। সিএনজি স্টেশনের সামনের সড়কটিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। খানাখন্দ সড়কের কারণে প্রায় সময় পণ্যবাহী ট্রাক, লরি, পিকআপ, ভ্যানগাড়ি মালামালসহ উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। তাই সড়কটি ব্যবহারে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয় বলে চালকরা জানান।

 

বেহাল সড়কের কারণে দশ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে দেড়  থেকে দুই  ঘণ্টা লাগে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা তৈরি হয়েছে যাত্রাবাড়ী কাঁচা বাজার আড়তের সামনের অংশে। সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে প্রায় সময় পণ্যবাহী ট্রাক, লরি ও পিকআপ উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান।

 

যাত্রাবাড়ীর কাঁচাবাজার আড়তের সামনে রফিক মিয়া নামের এক ভ্যানচালক বলেন, অনেক দিন থেকে সড়কটির খারাপ অবস্থা। ভ্যানে মালামাল নিয়ে যেতে অনেক সমস্যা হয়। গত সপ্তাহে এক ট্রাক উল্টে গিয়েছিল। ঢাকা শহরে এমন রাস্তা আর কোথায়ও নাই। থানার সামনে কাজ শুরু হলেও শেষ কবে হয় কে জানে।

 

এক মিনিটের রাস্তা পার হতে এক-দেড় ঘণ্টা লাগে বলে জানান পিকআপচালক রায়হান। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কটি মনে হয় একটি নদী। বড় বড় গর্তে পানি-কাদায় একাকার অবস্থা। গর্তে পড়ে প্রতিদিনই গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটে। খারাপ সড়কের কারণে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।’ এই সড়কের কারণে প্রতিদিন যাত্রাবাড়ী মোড়ে এক ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয় বলে জানান তিনি।  

 

সরকার এত উন্নয়ন করছে, কিন্তু এই সড়কের দিকে কোনো নজর নেই, কারণটি রহস্যজনক বলে মন্তব্য করেন আরিফুল নামের কুতুবখালীর এক বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘ফ্লাইওভার হওয়ার পর থেকে নিচের সড়কগুলোর খারাপ অবস্থা। বছর দুই আগে এই সড়কের পাশের ড্রেন সংস্কার করা হয়েছিল। তখন কোনোমতে সড়ক ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু বছর না যেতেই আবার আগের অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রায় বছরখানেক হবে সড়কটির এই অবস্থা। কিন্তু দেখার কেউ নেই।’

 

বোরহান নামের এক বাসচালক বলেন ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত যেতে যে সময় লাগে, এর অর্ধেকেরও বেশি সময় লাগে যাত্রাবাড়ীর যানজটের কারণে। রাজধানী সুপার মার্কেটের মোড় থেকেই যানজট শুরু হয়। এরপর সায়েদবাদ, জনপথ মোড়, যাত্রাবাড়ী ও কুতুবখালী পর্যন্ত এক থেকে দেড় ঘণ্টা যানজটে আটতে থাকতে হয়।  যাত্রাবাড়ী রাস্তার কারণে গাড়ির অর্ধেক আয়ু কমে গেছে বলে জানান তিনি।

 

একই কথা বললেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন বাস, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চালকরা। তারা জানান, ঢাকা থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ১৫-১৬ কিলোমিটার হবে। কিন্তু কুতুবখালী পর্যন্ত এক  কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে খবর হয়ে যায়। বেশিরভাগ গাড়ি ফ্লাইওভার ব্যবহার করে। কিন্তু সড়কের যে অবস্থা, যানবাহন চালানোর মতো পরিবেশ নেই। ড্রাইভিং পেশায় আছি বলে বাধ্য হয়ে খানাখন্দ সড়ক দিয়ে বাস-ট্রাক-লরি চালাই। খানাখন্দ সড়কে হেলেদুলে গাড়ি চলে। চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হয়। খানাখন্দ সড়কে গাড়ি উল্টে গিয়ে ছোট কোনো গাড়ির বা পথচারীর ওপর পড়ে কোনো হতাহত হলে আমাদেরই ফাঁসাবে।



এ বিষয়ে ডিএসসিসির ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মাসুম মোল্লা বলেন, গত রোজার ঈদের পর সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে সড়কের কাজ শেষ হবে। সড়কের দুই পাশেই কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হবে। যাত্রাবাড়ী থানার সামনে থেকে ফ্লাইওভারের দ্বিতীয় টোলপ্লাজা পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণে প্রায় ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে সড়কে অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই ট্রাক চলাচল করে, এটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!