AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
পায়রা তাপবিদ্যুৎ

বকেয়া ২৯ কোটি ডলার পরিশোধ ২ কোটি  ডলার, কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা


Ekushey Sangbad
মুহাম্মদ আসাদ
০৬:২১ পিএম, ১৮ মে, ২০২৩
বকেয়া ২৯ কোটি ডলার পরিশোধ ২ কোটি  ডলার, কয়লা আমদানিতে অনিশ্চয়তা

পটুয়াখালীর পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গত মার্চ পর্যন্ত কয়লার ওভারডিউ (মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এমন বিল) বকেয়া পড়েছে ২৯৮ মিলিয়ন (২৯ কোটি ৮ লাখ) ডলার। এর মধ্যে চলতি মাসে দুই কিস্তিতে পরিশোধ করা হয়েছে ২ কোটি  ডলার (২০ মিলিয়ন) ডলার।  যা বিপুল পরিমাণ বকেয়ার বিপরীতে যা খুবই সামান্য। দীর্ঘ সময় ধরে বকেয়া এ বড় অংকের বিল এভাবে পরিশোধ করা হলে কয়লা পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)।

 

বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এএম খোরশেদুল আলম বলেন, গত মার্চ পর্যন্ত কয়লার ওভারডিউ হয়েছে ২৯৮ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে চলতি মাসে দুই কিস্তিতে ২০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে বিসিপিসিএল। তবে এ অর্থ খুবই সামান্য। আমরা কয়লা আমদানিকারকসহ মন্ত্রণালয় ও ব্যাংকের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। তবে কয়লা সরবরাহ আর পাওয়া যাবে কিনা সে বিষয়টি অনিশ্চিত।

 

বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া থাকার কারণে বর্তমানে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। কেন্দ্রটিতে এখন যে পরিমাণ কয়লা মজুদ রয়েছে তা দিয়ে আর কয়েকদিন চলা সম্ভব বলে জানিয়েছে বিসিপিসিএল। এরপর কেন্দ্রটি পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কয়লা আমদানি ও বকেয়ার বিষয়টি নিয়ে ১০ মে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (বিপিডিবি) চিঠি দেয় বিসিপিসিএল। ওই চিঠিতে বলা হয়, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা আমদানি বাবদ বকেয়ার পরিমাণ মার্চ পর্যন্ত ২৯৮ মিলিয়ন ডলার হয়েছে। বিপুল পরিমাণ বকেয়ার কারণে বিসিপিসিএল ৫০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার ও ডেফার্ড পেমেন্টের সুবিধা প্রদানকারী সিএমসি কয়লা আমদানির ক্ষেত্রে অর্থায়নে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কারণ চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়ার পিটি বায়ান রিসোর্সেস টিবিকে থেকে কয়লা সরবরাহের জন্য ঋণপত্র খুলতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

 

বিপিডিবিতে পাঠানো ওই চিঠিতে বিসিপিসিএল জানায়, ওভারডিউ থেকে ৫০ মিলিয়ন (৫ কোটি) ডলার পরিশোধ করা হলে তারা পরবর্তী মাসের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা সরবরাহের জন্য এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারবে। এভাবে শুধু ওভারডিউ থেকে প্রতি মাসে ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হলে প্রয়োজনীয় কয়লা সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে বলে বিসিপিসিএলকে জানিয়েছে সিএমসি।

 

বিসিপিসিএলের এক কর্মকর্তা   জানান, বিপিডিবিতে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে তা মার্চে পাঠানো চিঠিরই রিমাইন্ডার কপি। চিঠি অনুযায়ী যদি অর্থ পাওয়া যেত তাহলে হয়তো সিএমসি বিষয়টি বিবেচনা করত। কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। কয়লা আমদানিতে সিএমসি ডেফার্ড পেমেন্টের অর্থায়ন করে এখন বিপদে রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

 

সূত্র জানায়, কয়লা আমদানির বকেয়া বাবদ মার্চে ৫০ মিলিয়ন ডলার এবং এপ্রিলে ৭০ মিলিয়ন (৭ কোটি) ডলার বকেয়া পরিশোধ করার কথা ছিল বিপিডিবির। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এ অর্থ দিতে পারেনি।

 

গত মার্চ পর্যন্ত বিপিডিবির কাছে বিসিপিসিএলের পাওনার পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে কেবল কয়লা আমদানি বাবদই ২৯৮ মিলিয়ন ডলার বা ৩ হাজার ২১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা (বাংলাদেশ ব্যাংকের গতকালের ডলার রেট ১০৮ টাকা হিসাবে)। বিসিপিসিএল চিঠিতে জানায়, চলতি মে মাস থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। অর্থের অভাবে বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ থাকলে তার জন্য বিসিপিসিএল দায়ী থাকবে না বলেও বিপিডিবিকে পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

 

উল্লখ্য, ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সংকটে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা সরবরাহের লক্ষ্যে ২০২০ সালের এপ্রিলে বিসিপিসিএল ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পিটি বায়ান রিসোর্সেস টিবিকের সঙ্গে চুক্তি সই করে। এ চুক্তিতে বিসিপিসিএলের ৫০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার সিএমসি ছয় মাসের ডেফার্ড পেমেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়। মূলত সিএমসি ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য কয়লা আমদানি করে দিচ্ছিল।

 

১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য দৈনিক এক হাজার টন কয়লার প্রয়োজন। সে হিসেবে মাসে তিন লাখ টন কয়লার প্রয়োজন পড়ে। দেশে বিদ্যুতের তীব্র চাহিদার মৌসুমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বিপিডিবিকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পাশাপাশি জাতীয় গ্রিডে লোডশেডিং আরো বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহাঙ্গীর

Link copied!