- প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলা
- কাকলাইলে পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ
- সেগুন বাগিচায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, নাইটিংগেল মোড়ে সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ
- কাকইরাইলে বাস ভাংচুর, বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, গুলি, টিয়ার সেল,
- ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, একধিক সাংবাদিক গুরুতর জখম
শান্তিুপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বিএনপি। এছাড়া হেয়ার রোডে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলা, কাকরাইলে পুলিশ বক্স ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, সেগুন বাগিচায় প্রধানমন্ত্রীর হোডিং ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ, কাকরাইলে বাস ভাংচুর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, গুলি, টিয়ার সেল, ভাংচুর অগ্নিসংযোগ এবং নাইটিংগেল মোড়ে সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ, পুলিশ-বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ইত্যাদি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অঙ্গিকার করে। শুক্রবার বিএনপি কার্যালয়ে জরুরী সাংবাদিক সম্মেলন করে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কিন্তু শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অনুমতি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
এদিন ঢাকার কাকরাইল মোড়, হাইকোর্ট, সেগুনবাগিচা, প্রধান বিচারপতির বাসভাবনের সামনে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গেটে বিএনপির কর্মীরা ভাঙচুর চালিয়েছে। বেলা ১টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত।
শনিবার দুপুর দেড়টার পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীসহ চার জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসক নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের ডাল ভেঙে ও হাতের লাঠি দিয়ে নামফলক, গেটে হামলা চালায়। তারা ভেতরে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এর মধ্যে কাকরাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির অনুসারীরা। এসময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংর্ঘষ বাধে
এই ঘটনার রেশ ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিএনপি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক দফায় টিয়ারশেল ছোড়া হয়। দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় বিএনপির সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে পুলিশ।
কাকরাইল নাইটিংগেল মোড়ে গুলিতে আহত হন মারুফ নামে একজন সংবাদকর্মী। এছাড়া কাকরাইল মোড়ে বিএনপি কর্মীদের হামলায় আহত হন দৈনিক ইত্তেফাকের সংবাদকর্মী শেখ নাসির।
রাজধানীর হাইকোর্ট মাজারের সামনে হামলায় মো. সুজন (২৬) নামে এক যুবলীগ কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে কাকরাইল মোড় এলাকায় বৈশাখী বাস ভাঙচুরের ঘটনায় মোহাম্মদ নাসির (২৫) নামে এক বাস যাত্রী আহত হন।
বেলা ১২টার দিকে মো. সুজন (২৬) ও মোহাম্মদ নাসিরকে (২৫) উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. সোহেল জানান, পল্টন থেকে হাইকোর্টের দিকে আসার পথে অজ্ঞাত কয়েকজন সুজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় সুজনকে ছুরিকাঘাতে ও মাথায় আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।আহত সুজনের বাসা বনানীর করাইল আদর্শ বস্তি এলাকায়।
অন্যদিকে সকাল ১১টার দিকে কাকরাইলে রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সামনে বৈশাখী বাস ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কে বা কারা বাসটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বাসযাত্রী নাসিরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. মুক্তা জানান, বৈশাখী বাসে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন যুবক হামলা চালায়। এতে বাসে থাকা নাসির আহত হন। পরে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
আরামবাগে পুলিশের গুলিতে জামায়াত ইসলামীর কর্মী নওয়াব আলী শেখ (৬০) আহত হয়েছে। আহত নওয়াব আলী শেখ নিজেকে জামায়াত কর্মী দাবি করে বলেন, দুপুরে আরামবাগে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। সেটা অতিক্রম করার সময় পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে আমার ডান পায়ে গুলি লাগে।
নওয়াব আলী শেখকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আহত রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন তিনি। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে দুপুর সোয়া ১টার দিকে চিকিৎসার জন্য ঢামেকে আসি।
অপর দিকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে গুলিস্তান পরিবহন গাড়িতে হামলায় বিএম রাজু কামাল (৫০) নামের এসেনশিয়াল ড্রাগ এর কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন সাতরাস্তা মোড় থেকে গাড়িতে উঠি গুলিস্তান যাওয়ার উদ্দেশে। পথে দুপুর কাকরাইল মসজিদের আগে রাস্তায় গাড়ির মধ্যে হামলার শিকার হই। ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন আহত দুজনের ঢামেক জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা/এসআর