দেশের জনগণের উত্তাল আন্দোলন আর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি অক্টোবরেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তা হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য। এমনটি হলে বিএনপিকে জনগণ আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য নির্বাচিত করবে।
অক্টোবর ঘিরে রয়েছে বিএনপির উত্থান-পতনের নানান ঘটনা। ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে জয়লাভ করে ১০ অক্টোবর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে। আবার ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ছিল এ সরকারের শেষ দিন। কয়েক মাসের টানা আন্দোলন সংগ্রামের পর আবারও এসেছে চলতি বছরের অক্টোবর। এ মাসেই সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে চান দলটির নেতারা।
২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করে বিএনপি। ১০ অক্টোবর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালে চালু হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বিতীয় নির্বাচন ছিল সেটি। নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন লতিফুর রহমান।
পরবর্তীতে ২০০৬ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার যখন বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কে এম হাসান যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের দায়িত্বে নিতে না পারেন সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে।
এমন প্রেক্ষাপটে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টন-বায়তুল মোকাররম এলাকায় সরকারের শরিক জামায়াতে ইসলামী এবং আওয়ামী লীগের কর্মীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর বিএনপির গণআন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের পতন, ২০০১ সালের অক্টোবরে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়লাভ করে সরকার গঠন। সুতরাং বাংলাদেশের ইতিহাসে অক্টোবর, নভেম্বর ডিসেম্বর- এ তিন মাস বিএনপির রাজনীতির জন্য ঘটনাবহুল এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতা ছাড়ার প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে বিএনপি নেতারা বলেন, তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ লগি-বৈঠা কর্মসূচির মাধ্যমে তাণ্ডব সৃষ্টি করে। সারাদেশে ১১ জনকে হত্যা করে। সচিবালয়ের সামনে অফিসগামীদের দিগম্বর করে। এ পরিস্থিতিতে তারা ১/১১ সৃষ্টি করে। ওই সরকারকে তারা নিজেদের আন্দোলনের ফসল বলে দাবি করে।
এক দফার আন্দোলনে সারাদেশে সব পেশার মানুষ ক্রমশ সংগঠিত হচ্ছে। ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনগুলোও ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এবার ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালে পুনরাবৃত্তি আর করতে দেওয়া হবে না। জনগণের বিজয় অর্জন হবেই, ইনশাআল্লাহ।
দলটির সূত্রগুলো বলছে, টানা দেড় দশক রাজনীতিতে খাদের কিনারে থাকা বিএনপি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক ফয়সালা নিশ্চিত করতে চায়। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গড়ার লক্ষ্যে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বড় ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণার চিন্তা আছে দলটির নীতি নির্ধারকদের।
এ বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সরকারকে দাবি মানতে হবে। মানুষকে নিষ্পেষণের যেসব নার্ভ সরকারের হয়ে কাজ করে, সেগুলোকে অচল করে দেবো আমরা।
একুশে সংবাদ/আ.ভ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :