AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

একাকিত্ব-হতাশায় বাড়ছে ফেসবুক আসক্তি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৯:০০ পিএম, ১৩ মার্চ, ২০২১
একাকিত্ব-হতাশায় বাড়ছে ফেসবুক আসক্তি

ফেসবুক বর্তমান বিশ্ব সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি ওয়েবসাইট।বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন কোনটি? এমন প্রশ্নে সকলেই নিঃসন্দেহে ফেসবুকের কথা বলবে। যার মাধ্যমে সকল পরিচিত লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।

ফেসবুকের জন্ম ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ এবং এর জনক বা প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবাগ। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বন্ধু সংযোজন, বন্ধু বিয়োজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলি হালনাগাদ ও আদান-প্রদান করতে পারেন। সেইসঙ্গে একজন ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অঞ্চলভিত্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। আরও ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাদের প্রোফাইলে নিজের ছবি আপলোড করতে পারেন। মোটকথা ফেসবুকের আইডিতে ব্যক্তিগত তথ্যাবলি সবই দেওয়া যায়। বর্তমানে ফেসবুক কিশোর- কিশোরীদের জন্য উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই বেশি হচ্ছে । বর্তমান সময়ে আমাদের জীবন যাপনের মান অনেকটাই উন্নত হয়েছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি আপনজনদের কাছ থেকে, যার ফলে বাড়ছে একাকিত্ব। জীবনে আপনজনদের গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আমাদের ভালো সময়ে তারা যেমন পাশে থাকেন, তেমন প্রয়োজন দুঃসময়েও।আমাদের পুষে রাখা রাগ, দুঃখ, অভিমান থেকে জন্ম নিচ্ছে হতাশা ও একাকিত্ব। আর সেই হতাশা ও একাকিত্ব এখন এমন পর্যায়ে যাচ্ছে যা আমাদের আজান্তেই মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ আমরা মন খুলে কারও সঙ্গে মনের কথা বলতে পারি না।যে কোন কিছু আমরা আগে ফেসবুকে শেয়ার করি।তবে লক্ষণীয় যে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের ব্যবহার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করেছে। বিশ্বের যেকোনো স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বন্ধুদের কাছে টেনে নেয়ার মতো সুযোগ এই মাধ্যমটিই করে দিয়েছে। সবচেয়ে লক্ষণীয় ব্যাপার হলো- মানুষের দৈনন্দিন জীবনে কিছু ভালো সময় কাটানোর একটি অন্যতম প্ল্যাটফরম ফেসবুকই আর সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। তবে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডের এ জায়গাটি যতই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে তার চেয়ে নেতিবাচক প্রভাবটা অনেক বেশি ফেলেছে। প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ প্রচুর সময় ব্যয় করার পাশাপাশি ফেসবুকে থেকে নিজেরা হতাশায় ভুগছেন- এমনটাই মনে করছেন গবেষকরা। কিশোর-কিশোরীদের উপর সামাজিক মিডিয়ার প্রভাব দুটি প্রধান উপায়া প্রকাশ পায় প্রথমত  অভ্যন্তরীণভাবে (হতাশা এবং উদ্বেগ) এবং দ্বিতীয়ত বাহ্যিকভাবে (আগ্রাসী আচরণ বা অসামাজিক আচরণ)। ভবিষ্যতে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না বা সোশ্যাল মিডিয়াতে অসক্ত না এরকম কোনো কিশোর-কিশোরীদের খুজে পাওয়া যাবেনা।বিভিন্ন সমাজ বিজ্ঞানী ও গবেষক বলছেন, ফেসবুক মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনলেও এর থেকে প্রভাবিত হয়ে হতাশ হচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে এ হতাশা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তরুণ সমাজের মাঝে বেশি লক্ষণীয়।দেখা যায়, কেউ সারাদিন ব্যস্ততার পর বাড়ি ফিরে ফেসবুক অনলাইনে আসেন। ওয়াল ঘুরে দেখলেন কাছের বন্ধুদের অনেকে কোথাও ঘুরতে গিয়েছেন সেসব ছবি, যেখানে তার থাকার কথা থাকলেও পারেননি। আবার অনেকে আছেন অনলাইনে প্রায়ই কোনো এক বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটিংয়ে ব্যস্ত। কিন্তু হঠাৎ তিনি লাপাত্তা। তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েও পারছেন না। এর থেকে হতাশায় ভোগেন তারা। অনলাইনে থাকলে মাঝে মাঝে অলস সময় কাটানো যায়। কিন্তু এর থেকে বড় সমস্যা হলো- প্রায়ই হতাশ হয়ে যায় অনেকেই কেননা বন্ধুবান্ধবের অনেকের অ্যাক্টিভিটি দেখে। নিউজফিডে সবার কাজকর্ম দেখে সময়গুলোতে অস্থিরতা কাজ করে এবং এক সময় তা হতাশায় পরিনত হয়। ফেসবুক যতটা আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে ততটাই খারাপ প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে চ্যাটিংয়ে অনেকের সঙ্গে কথা হয়। দেখা যায়, যে বন্ধুকে বেশি ভালো লাগে তার সঙ্গে হঠাৎ কথোপকথন বন্ধ হয়ে গেলে ভীষণ খারাপ লাগে। এ সময় খানিকটা একাকিত্ব অনুভব করে। ফেসবুকের প্রতি অত্যধিক আগ্রহ ব্যবহারকারীদের মেজাজ খিটখিটে করে দেয়। আর বন্ধুদের বিভিন্ন দিক দেখে হতাশায় ভোগে। কারণ, এক সময় বন্ধুদের কাছ থেকে তাদের সাফল্যের আপডেট পেতে পেতে আপনার নিজেকে একা, পিছিয়ে পড়া, হেরে যাওয়া বলে মনে হতে পারে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উদ্ভব ব্যবহারকারীদের বিশেষ করে অল্পবয়সি ব্যবহারকারীদের সমাজ থেকে পৃথক করে দিচ্ছে। এ ছাড়া তারা আগের চেয়ে অনেক বেশি একা হয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক আসক্তির কারণে তাদের আর কোন কিছু ভালো লাগে না একসময় খারাপ আচরণে রূপ নেয়। আর এই আসক্তি অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চেয়ে ফেসবুকের ক্ষেত্রে বেশি। ফেসবুকের ক্ষতির প্রভাব পড়েছে দেশের যুব সমাজে। বর্তমানে সামজিক যোগাযোগ ব্যবহারের মাধ্যমে যুব সমাজ শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়ছে। লেখাপড়া বাদ দিয়ে রাত জেগে ফেসবুক ব্যবহার করছে। রাত জাগার কারণে স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে বাবা মায়ের সঙ্গে সন্তানরা ভালো আচরণ করছে না। সামাজিক যোগাযোগ ব্যবহারের মধ্যে অনেকে আবার যৌনতায় জড়িয়ে পড়ছেন। নেশায় আকৃষ্ট হচ্ছেন। এসব কারণে ফেসবুক ব্যবহারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। যাতে করে আমরা সমাজ থেকে হারিয়ে না যাই। তাই এ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ করতে হবে। এ কথা আমরা সবাই জানি, অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। গত কয়েক বছরে এ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা হয়েছে। এ রকমই কিছু গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, একাকিত্ব নিয়ে আমাদের সাধারণ ধারণা হচ্ছে বয়স হলে মানুষ একা হয়ে যায়। কিন্তু কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরাও দিন দিন একা হয়ে যাচ্ছে ফেসবুকের কারনে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলছে। ফেসবুকে আসক্তির কারণে কিশোর-কিশোরীরা অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে একাকী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। আর এই একাকিত্ব থেকে বাড়ছে হতাশা। দীর্ঘদিনের হতাশা থেকে তারা হয়ে পড়ছে আত্মহত্যাপ্রবণ। তবে একাকিত্ব শারীরিক ও মানসিক দুদিক দিয়েই রোগীদের ক্ষতি করে। এরা আস্তে আস্তে সবার থেকে দূরে সরে যায় এবং তাদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

সুতরাং ফেসবুকের দায়িত্বশীল এবং পরিমিত ব্যবহারই এর একমাত্র সমাধান হতে পারে। আসুন সচেতন হই এবং অন্যকে সচেতন করি।


একুশে সংবাদ/হু.ক/আ

Link copied!