প্রায় দুই বছর ধরে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধে এর আগে এতোটা ভয়াবহতার সাক্ষী হয়নি ইউক্রেন। শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। আহত হয়েছেন দেড়শ’র বেশি। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘রাশিয়া তার অস্ত্রাগারে থাকা প্রায় সব ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করেছে’। পাশাপাশি তারা বাড়িঘর এবং একটি প্রসূতি হাসপাতালেও আঘাত করেছে।
রাজধানী কিয়েভ, ওদেসা, জাপোরিঝিয়া, নিপ্রো, খারকিভসহ বিভিন্ন এলাকায় একযোগে আঘাত হানে রাশিয়ার হাইপারসনিক কিনজল মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল এবং শাহেদ ড্রোনসহ দেড় শতাধিক ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দেয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, গতকাল দেশটির বিভিন্ন এলাকায় আকাশপথে ১৫৮টি হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এর মধ্যে ১১৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
মুহুর্মুহু মিসাইল আর ড্রোন হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের বেশ কয়েকটি শহর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক সামরিক ঘাঁটিসহ ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঘটেছে বহু হতাহতও।
ইউক্রেনের এক নারী হামলার বিষয়ে বলেন, হঠাৎ করে আমার বাড়িটি ভয়ানকভাবে দুলতে শুরু করে। তখনই বুঝে যাই খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। বাচ্চাদের নিয়ে কোনোমতে দৌড়ে নিচে নামি।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণের সময় তিনি ঘরেই ছিলেন। হঠাৎ ভয়ঙ্কর শব্দে কেঁপে ওঠে সবকিছু। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেছেন বলে জানান তিনি। বলেন, আমার ঠিক পাশের বাড়িতে আঘাত হানে ওদের মিসাইল। বাড়িটিতে থাকা একজন বৃদ্ধা মারা গেছেন।
প্রসঙ্গত, দু’দিন আগে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের কাছে রুশ নৌবহরের একটি ল্যান্ডিং শিপে হামলা চালায় ইউক্রেন। তারপর দিনই ইউক্রেনকে ২৫ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তাই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একই সাথে যুদ্ধজাহাজে হামলার প্রতিশোধ আর পশ্চিমাদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়তেই এমন আগ্রাসী হয়ে উঠেছে পুতিন প্রশাসন।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সের্গেই ল্যাভরভ হুমকি দিয়েছেন, হামলা কেবল শুরু। আরও বড় আঘাত আসবে সামনে। তিনি বলেন,এই যুদ্ধ বরাবরই অসম। পুরো পশ্চিমা বিশ্বের সাথে একা লড়াই করছে রাশিয়া। কিন্তু দেশের মানুষের ঐক্য আর সাহসের কাছে পশ্চিমাদের অত্যাধুনিক অস্ত্রকে বারবারই হারতে হবে। তার প্রমাণ বিশ্ববাসী দেখেছে। আরও দেখবে।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :