AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

তথ্যশক্তিতে আগাইয়া থাকিবার হীন প্রতিযোগিতা


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৪:১২ পিএম, ১০ জুলাই, ২০২৩
তথ্যশক্তিতে আগাইয়া থাকিবার হীন প্রতিযোগিতা

বাংলাদেশের ৫ কোটিরও অধিক নাগরিকের সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হইয়াছে বলিয়া খবর প্রকাশিত হইয়াছে। অভিযোগ উঠিয়াছে, গুগলে সার্চ করিলেই যে কেহ একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ঢুকিয়া ৫ কোটি নাগরিকের নাম, জন্মতারিখ ও এনআইডি নম্বর দেখিতে পারিতেছেন। সম্প্রতি ইহা দেখিতে পান বিটক্র্যাক সাইবার সিকিউরিটির গবেষক ভিক্টর মার্কোপোলোস। তাহার মাধ্যমে বিষয়টি সামনে লইয়া আসে মার্কিন অনলাইন পোর্টাল টেকক্রাঞ্চ। এই ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য বলিয়াছেন যে, বাংলাদেশের ৫ কোটি নাগরিকের তথ্য ফাঁসের ঘটনাটি কী ঘটিয়াছে, কতখানি ফাঁস হইয়াছে—তাহা সরকার দেখিবে। ঘটনা সত্য হইলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানাইয়াছেন তিনি। এইদিকে ইসরাইলের নজরদারি প্রযুক্তি আনিয়া সরকারবিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর নজরদারি করিতেছে বলিয়া গত শনিবার অভিযোগ করিয়াছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদিকে ইসরাইল ও তাহার গোয়েন্দা সংস্থার সহিত বিএনপির গোপন আঁতাঁত রহিয়াছে বলিয়া মন্তব্য করিয়াছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

 

সার্বিকভাবে আমরা দুইটি সমস্যা দেখিতেছি। একটি সাধারণ জনগণের। ৫ কোটির অধিক নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হইলে তাহার দশমিক ১ শতাংশ কিংবা আরো কম অংশও যদি বিপদে পড়েন, অর্থাত্ তাহাদের তথ্য ক্লোন করিয়া যদি অর্থ বা লেনদেনসংক্রান্ত জালিয়াতি হয়, সেই সংখ্যাও কিন্তু কম হইবে না। যদিও প্রযুক্তিবিদরা বলিয়া থাকেন, এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আর কাহারোই গোপন নাই। প্রযুক্তি আমাদের রূপকথার জগতে ঢুকাইয়া দিয়াছে। অপূর্ব বৈচিত্র্যে ভরা এই প্রযুক্তির জগত্; কিন্তু সেই যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রায় শতবর্ষ পূর্বে বলিয়া গিয়াছেন—‘গোপন কথাটি রবে না গোপনে’—তাহাই আজ বাস্তব। কত জায়গায় কত কিছু সংগোপনে ঘটিয়া চলিতেছে। কত ধরনের গোপনীয় তথা ক্লাসিফায়েড তথ্য হ্যাকিংয়ের শিকার হইয়া প্রকাশ পাইয়া যাইতেছে। তাহা ছাড়া রহিয়াছে কত ধরনের নজরদারির অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, কত ধরনের ফাঁদ। ধরা যাক, বুড়া বয়সে আপনাকে দেখিতে কেমন লাগিবে—এই কৌতূহলের ফাঁদে পড়িয়া আপনি নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই খেলায় যুক্ত করিলেন। কিংবা অন্য যে কোনো আকর্ষণীয় খেলা, যাহা অনেকেই খেলিতেছেন, তাহা দেখিয়া আপনিও খেলিলেন। ইহার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী পক্ষ আপনার ছবি ও তথ্য কুক্ষিগত করিতে পারে। এই ধরনের অ্যাপসের ব্যাপারে কয়েক বৎসর পূর্বেই মার্কিন সংবাদপত্র ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ জানাইয়াছে যে, এখন আমাদের সকল ছবি কোনো বড় শক্তির হাতে। বহু দিন ধরিয়াই কিছু কিছু নজরদারি সংস্থা বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সকল ফটো সংগ্রহ করিতেছে প্রতিনিয়ত। ইহাও আমাদের স্মরণ রাখিবে হইবে, ফেসবুকের নিজস্ব ‘টার্মস অব সার্ভিস’-এর কথাগুলি। সেইখানে বলা হইয়াছে, ‘আপনি যদি ফেসবুকে কোনো ছবি শেয়ার করেন, তাহার অর্থ সেই ছবি স্টোর, কপি ও শেয়ার করিবার অনুমতি দিতেছেন।’ অর্থাত্, ফেসবুকের হাতেও ইতিমধ্যে আপনার বহু ছবি চলিয়া গিয়াছে এবং যাইতেছে। তাহা ছাড়া, আপনি কোথায় যাইতেছেন, কতক্ষণ থাকিতেছেন, গুগলে কী সার্চ করিতেছেন, কী আপনার পছন্দ—সকল কিছু প্রতি মুহূর্তে আপনি নিজেই আপনার স্মার্টফোনের মাধ্যমে এই সকল সংস্থার নিকট সরবরাহ করিতেছেন।


আপনার স্মার্টফোন প্রতিনিয়ত, এমনকি যখন ফোনটির সুইচড অফ, তখনো আপনার কথা রেকর্ড করিতেছে কি না—আপনি জানেন না। আপনার ফোনের ক্যামেরা অফ থাকিলে, তাহা অন করিয়া অন্য কোথাও ছবি পাচার করা হইতেছে কি না—আপনি জানেন না। আরো কত ধরনের স্প্যাই অ্যাপ কোথায় কীভাবে কাজ করিতেছে—আমরা তাহার কতটুকুই-বা জানি? প্রকৃত অর্থে আমরা এমন এক সময়ের স্রোতের ভিতরে পড়িয়াছি, যেইখানে গোপন কথাটি রহিবে না গোপনে। সুতরাং স্মার্টফোন ব্যবহার করিবার ক্ষেত্রে এই সকল বিষয় মাথায় রাখিয়াই ব্যবহার করিতে হইবে। এই যুগে তথ্যই সবচাইতে বড় শক্তি। সেই শক্তিতে সকলেই আগাইয়া থাকিতে চাহে। এইখানে কোনো মোরালিটি নাই। ইহাই এই যুগের হীন প্রতিযোগিতা।

 

দৈনিক ইত্তেফাক থেকে নেওয়া।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!