AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শক্ত বাঁধন


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
১০:০৪ পিএম, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
শক্ত বাঁধন

সদ্য প্রণীত বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন তথা পিএসসি আইনে সংস্থাটি পরিচালিত পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অপরাধে ১০ বৎসরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিবার বিধানটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। মঙ্গলবার গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন অনুসারে, জাতীয় সংসদে সোমবার পাস হওয়া উক্ত আইনে ভুয়া পরিচয়ে চাকুরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিলে দুই বৎসরের কারাদণ্ডের বিধানও রাখা হইয়াছে। বাংলাদেশে যে কোনো পাবলিক পরীক্ষায়- বিশেষত সরকারি চাকুরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি বহু বৎসর ধরিয়াই একটি তুমুল আলোচনার বিষয়। সদ্যসমাপ্ত বৎসরেও বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশাসন প্রশ্ন ফাঁসের নিদারুণ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইয়াছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, প্রচলিত আইনে এই সব অপরাধের শাস্তি সুনির্দিষ্ট ছিল না। শুধু উহা নহে, এই ডিজিটাল যুগে নানা ডিভাইস ব্যবহার করিয়া প্রশ্ন ফাঁসজনিত বহু অপরাধের জন্ম দেওয়া হইয়াছে; ঐসবের নূ্যনতম উল্লেখও সেখানে ছিল না। অবশ্য যে অধ্যাদেশটির পরিবর্তে নূতন আইনটি প্রণীত হইয়াছে, উহা আলোর মুখ দেখিয়াছিল ১৯৭৭ সালে, যখন ডিজিটাল ডিভাইস দূরের কথা, প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টিও হয়তো প্রণেতাদের মাথায় ছিল না। সেই দিক হইতে নূতন আইনটি অনেক অপূর্ণাঙ্গতাই পূর্ণ করিয়াছে বলা যায়।

 

ইহা অস্বীকার যাইবে না, সাম্প্রতিক সময়ে বহুবিধ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার কারণে পিএসসির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অঘটন সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় বন্ধ হইয়াছে। এই ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতাও উল্লেখযোগ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হইলেও সত্য, অন্যান্য বহু চাকুরির পরীক্ষা এখনও প্রশ্ন ফাঁসমুক্ত হইতে পারে নাই। ইতিপূর্বে ভর্তি পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষা, বোর্ড পরীক্ষা, অর্থাৎ প্রতিযোগিতামূলক প্রায় সকল ধরনের পরীক্ষায়ই প্রশ্ন ফাঁসের অঘটন ঘটিয়াছে। প্রশ্নপত্র তৈরির ক্ষেত্রে নানা পর্যায়ে যাহারা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করিয়া থাকেন, তাহাদেরও প্রশ্ন ফাঁসের সহিত জড়িত থাকিবার অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে। গত বৎসর দিনাজপুর বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সহিত স্বয়ং কেন্দ্র সচিব জড়িত ছিলেন। এই সময়ে বাংলাদেশ বিমানের কতিপয় পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস লইয়া বেশ তোলপাড় হইয়াছে। আমরা দেখিয়াছি, পুলিশের তদন্তে প্রকাশ পাইয়াছে- শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা, ক্ষমতাসীন দল ও ছাত্রসংগঠনের নেতা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীর নাম। এমনকি একজন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের নামও যেইভাবে আসিয়াছে তাহাতে ইহা স্পষ্ট, প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের গোড়া আসলে অনেক গভীরে। আমাদের মনে আছে, প্রশ্ন ফাঁসের একটি চক্র ধরা পড়িতে না পড়িতেই আরেকটি প্রশ্ন ফাঁস চক্র হাজির হইয়াছে। স্বস্তির বিষয় হইলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাহাদের ধরিতে সক্ষম হইয়াছে।


চাকুরি কিংবা পাবলিক পরীক্ষা সব ক্ষেত্রে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাইতেই হইবে। এ মেধা ও যোগ্যতাই সকল ক্ষেত্রে মাপকাঠি হওয়া উচিত। আমরা বিশ্বাস করি, পিএসসির কঠোরতায় সরকারি এ প্রতিষ্ঠান যেমন প্রশ্ন ফাঁস হইতে বাহির হইয়া আসিতে সক্ষম হইয়াছে; ঠিক একইভাবে সরকার চাইলে চাকুরির পরীক্ষা কিংবা ভর্তি পরীক্ষাসহ সকল পরীক্ষায়ও প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করিতে পারিবে।

 

আমরা মনে করি, প্রশ্ন ফাঁসে পিএসসির আইনে সাজা ঠিক করিয়া দিবার মাধ্যমের এহেন কলঙ্ক মোচনের পথে এক ধাপ অগ্রগতি ঘটিয়াছে। ইহা তখনই পরিপূর্ণ হইবে, যখন প্রশ্ন ফাঁসকারী বাস্তবেই সাজা ভোগ করিবে। নূতন আইনে বাঁধন শক্ত হইলেও গিরা যেন ফসকা না হয়। আমরা দেখিয়া আসিতেছি, প্রশ্ন ফাঁসের অপরাধে অনেকে গ্রেপ্তার হইলেও কাহারোই সেই অর্থে দৃষ্টান্তযোগ্য শাস্তি হয় নাই। তাহাদের শাস্তির ক্ষেত্রে পিএসসির আইন পথ দেখাইতে পারে। প্রশ্ন ফাঁসের সহিত যাহারা অসদুপায় অবলম্বন করিয়া অন্যের হইয়া পরীক্ষা দিবে, তাহাদের শাস্তি কেমন হইতে পারে তাহাও পিএসসির বিলে স্পষ্ট। প্রশাসন চাহিলে অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষা ও চাকুরির পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধেও তদ্রুপ আইন করিতে পারে।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!