AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০১ অক্টোবর, ২০২৩, ১৬ আশ্বিন ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ব্রহ্মপুত্র নদের উপর সেতু, পাল্ট যাবে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,কুড়িগ্রাম
০৩:৪৮ পিএম, ৪ মার্চ, ২০২৩
ব্রহ্মপুত্র নদের উপর সেতু, পাল্ট যাবে উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র

কুড়িগ্রাম জেলায় মোট নয়টি উপজেলা রয়েছে। তার মধ্যে রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলা ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা কুড়িগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে রাজীবপুর ঘাট থেকে চিলমারী নৌ-বন্দর পর্যন্ত যেতে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা লাগলেও শুষ্ক মৌসুমে লাগে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টা। শুধু তাই নয় শীত ও শুষ্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকট, ঘন কুয়াশা ও নদীর রেখা পরিবর্তনের কারণে চিলমারী নৌ বন্দর পর্যন্ত পৌঁছতে পাঁচ-আট ঘন্টা পর্যন্তও লেগে যায়। কখনো কুয়াশার কারণে ভুল পথে চলে নৌকা। শুষ্ক মৌসুমে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাধাগ্রস্ত হয় নৌকা। যাতায়ত ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় রাজীবপুর উপজেলা কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে দারিদ্রতার দিক থেকে প্রথমের সারিতে অবস্থান করছে।

 

দেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, রাজিবপুর উপজেলায় দেশের সবচেয়ে বেশি দরিদ্র মানুষের বসবাস। দারিদ্র্যের হার ৭৯.৮ শতাংশ। এই উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার। অন্তত ৩০-৪০ টি চর রয়েছে। এসব চরের বাসিন্দারের বেশিরভাগ হতদরিদ্র। এমন কিছু পরিবার রয়েছে যারা ২০ থেকে ৩০ বারের অধিক নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে সর্ব শান্ত হয়েছে। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রৌমারী। এ উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ৭৬. ৪ শতাংশ। কুড়িগ্রাম শহরের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ক্লান্তিহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় এ দুই উপজেলার চার লক্ষাধিক মানুষকে। কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থার জটিলতার কারণে জরুরী রোগী ও প্রসূতিদের উপযুক্ত চিকিৎসা মেলে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু স্বাধীনতার মুক্তাঞ্চলখ্যাত রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা উন্নয়নের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না।

 

নৌ-রুটে পণ্য পরিবহন ও যাত্রী পারাপারের ব্যাপক ভোগান্তি। ঝুঁকি নিয়ে নৌ-রুটে চলছে নৌ-যান। এতে করে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ী,মুমূর্ষ রোগী, মামলার বাদী বিবাদী, চাকুরীজীবী ও কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্বাধীনতার ৫২ বছর হলেও জেলা সদরের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ স্থাপন হয়নি এই দুই উপজেলার। বিভিন্ন কারণে নৌ-রুট গুলোতে জনসাধারণের জন্য স্পিডবোট কিংবা অন্যান্য দ্রুতগামী যানবাহনের ব্যবস্থা পর্যন্তও নেই এই নৌ-রুটে।

 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন, ভঙ্গুর যোগাযোগ ব্যবস্থা, নদীভাঙ্গন ও বেকারত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। কুড়িগ্রামের সদর থেকে রৌমারী ও রাজিবপুরের দূরত্ব ৬৩ কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে ২৬ কিলোমিটার আঁকাবাঁকা নদীপথ।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রভাষক আব্দুস সবুর ফারুকী জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় অঞ্চলটি ছিল সর্বদা মুক্ত। পাক হানাদার বাহিনীর পদচারনা এখানে না থাকায় মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের কোন দোষরাও ছিল না। সোজা কথায় এখানে রাজাকার আল-বদর দালালদের জন্ম হয়নি। এই এলাকার মানুষের প্রাণের দাবি একটি মাত্র সেতু। যার মাধ্যমে সমৃদ্ধি হবে এলাকার অর্থনৈতিক জীবন যাত্রা। উত্তরাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন হবে একটি সেতুর মাধ্যমে। অর্থনৈতিক পরিবর্তনের সাথে বেকারত্ব হ্রাস পাবে।

 

সংগঠক ও সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জানান, একটি সেতুর অভাবে উন্নত চিকিৎসা,ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ,কৃষি, শিক্ষাসহ নানা কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ জনপদের মানুষ। সেতু নির্মাণ হলে মানুষের দুর্ভোগ শেষ হবে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে দরিদ্র এলাকার মানুষজন এগিয়ে যাবে। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একটি সেতু বাস্তবায়ন করার।

 

স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, স্বাধীনতার মুক্তাঞ্চল ছিলো রাজীবপুর ও রৌমারী। এখানে ৬৫ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের উপর সেতু এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এটি নির্মাণ হলে বঙ্গবন্ধু সেতুতে চাপ অনেক কম যাবে। হাজারও মানুষের কর্মসংস্থান হবে, বেকারত্ব কমবে। এতে কুড়িগ্রামসহ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে।

 

একুশে সংবাদ/ন.দা/এসএপি

Link copied!