অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন বাজারের ৮০০-এর বেশি দোকান অগ্নি ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ঢোকার মাত্র ৪টি পথ রয়েছে। পথের দুই ধারে হকার ও ক্রেতাদের ভিড়। এক গলি দিয়ে ঢুকলে অন্য গলি দিয়ে বের হতে ক্রেতাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ফল, কাপড়, জুতা, কৃষি বীজ, প্লাস্টিক ও কসমেটিকসসহ বিভিন্ন পণ্য ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, বাজারে আগুন লাগলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে।
উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজারটি সদর ইউনিয়নের চরভদ্রাসন বাজার। ভুবনেশ্বর নদী ঘেষা এই বাজারে পাইকারি ও খুচরা সকল ধরনের পণ্য বিক্রি হয়। বাজারের ভিতরে রয়েছে—
চরভদ্রাসন উপজেলা দপ্তর, থানা, পোস্ট অফিস, সরকারি কলেজ, সরকারি স্কুল, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কাজী অফিস, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, আয়কর অফিস, মডেল মসজিদ, স্বর্ণের দোকান, মুদি দোকান, কৃষি সার ও কীটনাশকের দোকান, সবজি বাজার, কামারপট্টি সহ নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চা বিক্রেতা বলেন, “সবজি বাজারে মাত্র ৯০টি দোকান রয়েছে। আগুন লাগলে সব দোকান পুড়ে যাবে। সড়ক ফাঁকা না থাকায় নদী থেকে ফায়ার সার্ভিস পানি আনতে পারবে না।”
চরভদ্রাসন সরকারি কলেজের এক উপাধ্যক্ষ জানান, “যারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন, তারাই অলিগলিতে দোকান বসিয়ে বাণিজ্যে জড়িত। বাজারের ভিতরে আলো–বাতাস নেই। প্রায় সব দোকানের বারান্দায় পলিথিন থাকে। দোকানদাররা ঠিকমতো অক্সিজেন পাচ্ছে না।”
এক মুদির দোকানদার বলেন, “বাজারের ভিতরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকলে নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। ব্যবসায়ী সমিতির নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকা উচিত।”
চরভদ্রাসন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন মোল্লা বলেন, “বাজারে ৮০০-এর বেশি ছোট-বড় দোকান রয়েছে। আগুন লাগলে সব দোকান পুড়ে যাবে। সাবেক ইউএনওকে বারবার বিষয়টি জানিয়েছি। বাজারের অধিকাংশ দোকানে অগ্নিনির্বাপক গ্যাস সিলিন্ডার আছে, কিন্তু বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে তা দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।”
চরভদ্রাসন উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. মর্তুজা ফকির জানান, “বড় সমস্যা হলো বাজারের ভিতরে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতে পারবে না। অগ্নিনির্বাপণ বিধিমালা অনুযায়ী অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, ফায়ার এক্সিট, ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টর এবং সেফটি ট্যাংক নেই। আইনশৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি জানিয়েছি, তবে এখনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

